১২ থেকে ১৬ সপ্তাহ পর্যন্ত দ্বিতীয় ডোজ টিকার সুযোগ আছে : স্বাস্থ্য অধিদপ্তর
করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে প্রথম ডোজের টিকা নেওয়ার পর ১২ থেকে ১৬ সপ্তাহ পর্যন্ত দ্বিতীয় ডোজ দেওয়ার সুযোগ রয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মুখপাত্র ও রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক (সিডিসি) অধ্যাপক নাজমুল ইসলাম।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মুখপাত্র বলেন, ‘অপেক্ষা করুন, ধৈর্য ধারণ করুন। ১২ থেকে ১৬ সপ্তাহ পর্যন্ত টিকা দেওয়ার সুযোগ থাকবে। এর মধ্যেই সরকার সর্বোচ্চ পর্যায়ে চেষ্টা করছে টিকা সংগ্রহের জন্য। আমরা আশাবাদী, এই টিকা সংগ্রহ হবে এবং দ্বিতীয় ডোজ সবাই পেয়ে যাবেন।’
গতকাল বুধবার অধিদপ্তরের স্বাস্থ্য বুলেটিনে মুখপাত্র এ তথ্য জানান।
নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার প্রথম ডোজ দেওয়া বন্ধ রয়েছে, আর দ্বিতীয় ডোজ একেবারেই শেষ পর্যায়ে রয়েছে। দ্বিতীয় ডোজের যে পরিমাণ টিকা রয়েছে, সেটা দিয়ে প্রথম ডোজ গ্রহীতা সবাইকে টিকা দেওয়া যাবে না।’ তিনি জানান, একই সঙ্গে চীন থেকে উপহার হিসেবে আসা সিনোফার্মের পাঁচ লাখ ডোজ টিকা গত মঙ্গলবার ৫০১ জন মেডিকেল শিক্ষার্থীদের দেওয়া হয়েছে এবং তাদের কারও মধ্যে কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয়নি। আগামী সাত থেকে ১০ দিন তাদেরকে পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। এরপর জুন থেকে জুলাই মাসের মধ্যে সিনোফার্মের টিকার প্রথম ডোজের টিকাদান কার্যক্রম শুরু হবে।
দেশে নতুন করে আতঙ্ক ছড়ানো ব্ল্যাক ফাঙ্গাস বা মিউকরমাইকোসিসকে গভীর পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে বলে এ সময় জানান স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মুখপাত্র। তিনি বলেন, ‘এ রোগের চিকিৎসা পদ্ধতি, চিকিৎসা ব্যয় ও ব্যবস্থাপনা কেমন হবে সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট একটি গাইডলাইন প্রণয়ন করা হচ্ছে।’
নাজমুল ইসলাম বলেন, ব্ল্যাক ফাঙ্গাস একটি বিরল জাতের রোগ, এটি খুব বেশি সংখ্যক মানুষের হয় বলে তথ্য-উপাত্ত আমাদেরকে বলে না। তবে অবশ্যই এর চিকিৎসা ব্যয়বহুল, এতে কোনো সন্দেহ নেই। এ বিষয়টি নিয়ে আমরা গত কিছুদিন যাবৎ ক্রমাগত কাজ করছি। তিনি বলেন, ‘আমাদের ক্লিনিক্যাল ম্যানেজমেন্ট কমিটি আছে, তাদের সঙ্গে আলোচনা করেছি এবং একটি গাইডলাইন প্রণয়ন করার চেষ্টা করছি। একইসঙ্গে এই রোগ মোকাবিলায় যেসব ওষুধপত্র লাগে, সেগুলো কীভাবে সহজলভ্য করা যায় সেগুলো নিয়েও আমরা কাজ করছি। আমরা অল্প সময়ের মধ্যে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবনা দেব।’
‘ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের ওষুধগুলো সহজে পাওয়া যায় না। তাই এই পরিস্থিতিতে কেউ যেন দাম নিয়ে সুযোগ নিতে না পারে, সে বিষয়টি মাথায় রেখে আমরা অগ্রসর হচ্ছি,’ বলেন মুখপাত্র।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক বলেন, আমরা দেখেছি ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে দুজন রোগী পাওয়া গেছে। যতক্ষণ পর্যন্ত সব পরীক্ষা-নিরীক্ষার নিশ্চিত করে ফলাফলগুলো হাতে না আসবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা যদি একটুখানি অপেক্ষা করি, তথ্য-উপাত্ত হাতে পেয়ে সবাইকে জানাই তাহলে সবার মধ্যে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা তৈরি হবে না। এখানে আমরা পরস্পর পরস্পরকে সহযোগিতা করা উচিত। তিনি বলেন, আমরা দেখতে পাচ্ছি মিউকরমাইকোসিস (ব্ল্যাক ফাঙ্গাস) নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে একধরনের উদ্বেগ বা উত্কণ্ঠা তৈরি হয়েছে। আমরা দেশবাসীকে আশ্বস্ত করতে চাই, এই রোগটি আদিকাল থেকে আমাদের পরিবেশের সঙ্গে আছে। বিশেষ পরিস্থিতি ও ক্ষেত্রবিশেষে এর প্রাদুর্ভাব ও সংখ্যাধিক্য দেখা যেতে পারে।
নাজমুল ইসলাম বলেন, করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে যেসব রোগীর ক্ষেত্রবিশেষ স্টেরয়েড ব্যবহার করতে হয় ও যাদের অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস মেলাইটাস আছে তাদের জন্য ব্ল্যাক ফাঙ্গাস সত্যিকার অর্থেই বিপদের কারণ হতে পারে। আমরা পরিস্থিতির দিকে গভীর পর্যবেক্ষণে করছি, আমরা আশা করছি, এটি কোনো অবস্থাতেই নিয়ন্ত্রণের বাইরে যেতে পারবে না।