৩ হাজার ২০০ কোটি টাকা হাতিয়েছে পেঁয়াজ সিন্ডিকেট : সিসিএস

ছবি : এনটিভি
পেঁয়াজের সিন্ডিকেট গত চার মাসে, সাধারণ মানুষের পকেট থেকে প্রায় তিন হাজার ২০০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। ১২২ দিনে মোট ২৪ বার পণ্যটির দাম ওঠানামা করেছে। চার মাসে পেঁয়াজের মূল্য বেড়েছে ৪০০ গুণ। আর গত এক মাসে দৈনিক ৫০০ কোটি টাকা করে হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে। আজ রোববার প্রেসক্লাবে কনসাস কনজিউমারস সোসাইটির (সিসিএস) ‘পেঁয়াজের মূল্য সিন্ডিকেটের নৈরাজ্য’ শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলন এসব তথ্য জানানো হয়।
লিখিত বক্তব্যে সিসিএসের নির্বাহী পরিচালক পলাশ মাহমুদ বলেন, ‘গত ঈদুল আজহার এক মাস আগে, জুলাই মাসের ২ তারিখ থেকে হঠাৎ করেই পেঁয়াজের দাম বাড়ানো হয়। তখন সরবরাহ ও আমদানি স্বাভাবিক থাকলেও এক দিনেই কেজি প্রতি ৩০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৪৫ টাকা করা হয়। সেই থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত চার মাসে (১২২ দিন) মোট ২৪ বার পেঁয়াজের মূল্য ওঠা-নামা করেছে। এর পেছনে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট কাজ করছে। চার মাসে পেঁয়াজ সিন্ডিকেট যে অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে তা দিয়ে দ্বিতীয় বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করা সম্ভব।’

ছবি : এনটিভি
পলাশ মাহমুদ আরো বলেন, ‘গত চার মাসে বাণিজ্যমন্ত্রী অন্তত পাঁচবার স্বীকার করেছেন, সিন্ডিকেট কাজ করছে। চট্টগ্রামে সিন্ডিকেটের ১৩ সদস্যকে চিহ্নিত করা হলেও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। সরবরাহ সংকট ও আমদানি খরচের যে কারণ দেখানো হচ্ছে, এ দুটি যুক্তি শুধুই অজুহাত ও ভোক্তার সঙ্গে প্রতারণার কৌশল। কারণ, ঈদুল আজহার এক মাস আগে কোথাও সরবরাহ ঘাটতি ছিল না এবং আমদানি খরচ বেশি ছিল না। শুধু ঈদকে সামনে রেখে সিন্ডিকেট করে পেঁয়াজের মূল্য বাড়ানো হয়। পরবর্তী সময়ে সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়ায় তারা অব্যাহতভাবে দাম বাড়াতে থাকে। ভারতের পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ এক মাস পার হয়ে গেছে। কিন্তু দেশের বাজারে সর্বত্রই এখনো ভারতীয় পেঁয়াজ পাওয়া যাচ্ছে। এতেই প্রমাণিত হয় পেঁয়াজের সরবরাহ যথেষ্ট ছিল এবং আছে।’
অন্যদিকে দেশি পেঁয়াজের দাম বাড়ার কোনো যৌক্তিক কারণ নেই উল্লেখ করে সিসিএসের পক্ষ থেকে বলা হয়, দেশে বছরে ২৪ লাখ টন পেঁয়াজের চাহিদা রয়েছে। এর দুই তৃতীয়াংশ বা ১৬ লাখ মেট্রিক টনের চাহিদা দেশি পেঁয়াজে পূরণ হয়। কোনো দেশ রপ্তানি বন্ধ করলে দেশি পেঁয়াজ সরবরাহ বন্ধ হওয়ার বা কমে যাওয়ার কোনো কারণ নেই।
গত ২ জুলাই থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত সিন্ডিকেট করে পেঁয়াজের দাম বাড়ানোয় গত চার মাসে ভোক্তার ক্ষতি হয়েছে তিন হাজার ১৭৯ কোটি ৩৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা। এর মধ্যে জুলাইয়ে ৩৯৭ কোটি ৬৭ লাখ টাকা, আগস্টে ৪৯১ কোটি ৪৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা, সেপ্টেম্বরে ৮২৫ কোটি ২৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং অক্টোবরে এক হাজার ৪৬৪ কোটি ৯৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা।