জাবিতে শিক্ষকদের অবরুদ্ধ করে ভবন দখল
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নবনির্মিত একটি ভবনের তৃতীয় তলার গেটের তালা ভেঙে ভবনের দুই প্রবেশপথে অবস্থান নিয়েছেন ভূতাত্ত্বিক বিজ্ঞান এবং কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। এতে পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের চার শিক্ষক ও কয়েকজন কর্মচারী ভবনের ভেতর ‘অবরুদ্ধ’ হয়ে পড়েছেন বলে দাবি করেছেন ওই বিভাগের অন্য শিক্ষকরা।
আজ মঙ্গলবার বিকেল ৩টার দিকে পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের বাকি শিক্ষকরা ভবনে ঢুকতে চাইলে ওই দুই বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা তাঁদের বাধা দেন। এ সময় তিন পক্ষের মধ্যে মৃদু ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটে।
ভূতাত্ত্বিক বিজ্ঞান এবং কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা কাউকে অবরুদ্ধ করেননি বলে দাবি করে এনটিভি অনলাইনকে বলেন, তাঁরা ইচ্ছা করলে বের হয়ে আসতে পারেন। তবে প্রশাসনের কর্মকর্তা ছাড়া তাঁরা কাউকে প্রবেশ করতে দেবেন না।
পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এ কে এম রাশেদুল আলম জানান, আজ মঙ্গলবার দুপুরে দেড়টার দিকে ভূতাত্ত্বিক বিজ্ঞান এবং কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ভবনের তৃতীয় তলায় অবস্থিত পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের তালা ভেঙে সেখানে অবস্থান নেন। পরে তারা ভবনের দুই প্রবেশপথে অবস্থান নিয়ে বাইরে থেকে কাউকে ঢুকতে দিচ্ছেন না। ফলে পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি এ এন এম ফখরুদ্দিন, শিক্ষক এ এইচ এম সা’দত, মোহাম্মদ এমাদুল হুদা ও ফাহমিদা পারভীনসহ কয়েকজন কর্মচারী ভবনে জিম্মি হয়ে পড়েন।
ঘটনা বিস্তারিত জানতে ও দেখতে বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত সাংবাদিকরা ভেতরে ঢুকতে চাইলে তাঁদেরও প্রবেশ করতে দেননি শিক্ষার্থীরা।
এর কারণ জানতে চাইলে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী হাবিবুর রহমান এনটিভি অনলাইনকে বলেন, প্রশাসনের লোকজন ছাড়া অন্য কাউকে ঢুকতে দেওয়া হবে না।
পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সভাপতি শরীফ উদ্দিন, শিক্ষক এমদাদুল ইসলাম, আবু সাঈদ মো. মোস্তাফিজুর রহমান এবং ভূতাত্ত্বিক বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক হাসান ইমামের নেতৃত্বে শিক্ষার্থীরা পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের তালা কেটে শিক্ষক ও কর্মচারীদের জিম্মি করে বিভাগ দখলে নেন। সন্ধ্যায় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ অভিযোগ করেন তাঁরা। একই সাথে তাঁরা দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
তবে এ ব্যাপারে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আবু সাঈদ মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘এ ভবন নিয়ে একটি সমস্যা রয়েছে। এটা সমাধান হবে, তারপর পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ভবনে প্রবেশ করতে পারবে। পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগ যেভাবে রাতের অন্ধকারে তৃতীয় তলা দখলে নিয়েছিল, তেমনিভাবে আমরা দেখিয়ে দিয়েছি যে দখল কোনো সমাধান নয়। আলোচনার মাধ্যমে এর সমাধান করতে হবে।’
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে জরুরি সিন্ডিকেট সভা ডেকেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম। রাত পৌনে ৮টায় এ প্রতিবেদন লেখার সময়ও সিন্ডিকেট সভা চলছিল বলে জানা গেছে।