তদন্ত শুরু হয়েছে : পুলিশ
গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য মঞ্জুরুল ইসলাম লিটন গুলিতে নিহত হওয়ার ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
আজ শনিবার সন্ধ্যায় সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বামনডাঙ্গার মাস্টারপাড়ার নিজ বাড়িতে আওয়ামী লীগের এই সংসদ সদস্যকে গুলি করা হয়। পরে রাত সাড়ে ৭টার দিকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তিনি মারা যান।
এ ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রাতে এক শোক বিবৃতিতে তিনি সংসদ সদস্যের পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
সন্ত্রাস দমনে নানা ভূমিকা রাখায় তাঁকে হত্যা করা হতে পারে- এমন ধারণা করছে পুলিশ। ঘটনার পর পরই পুলিশের রংপুর বিভাগের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) খন্দকার গোলাম ফারুক বলেন, ‘ওনার (এমপি লিটন) সঙ্গে আগে জামায়াত-শিবিরসহ জঙ্গি সংগঠনগুলোর তিক্ত সম্পর্ক ছিল। এলাকায় উনি জামায়াত-শিবিরসহ জেএমবি দমনের বিষয়ে সাহায্য করেছেন। ফলে তাঁর সঙ্গে একটি শত্রুতা ছিল।’
‘তারাই এই ঘটনা ঘটাল, নাকি অন্য কোনো গোষ্ঠী এই সুযোগটা নিল বা ওনার নিজের কোনো ব্যক্তিগত শত্রুতা ছিল কি না- এই বিষয়গুলো সামনে রেখে তদন্ত করে দেখব’, যোগ করেন ডিআইজি।
এদিকে এ ঘটনায় শোক প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘দেশ যখন উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছে তখন একটি মহল দেশে অরাজক পরিস্থিতি তৈরি করে স্বার্থ হাসিলের অপচেষ্টা চালাচ্ছে। হত্যা ও সন্ত্রাসের পথ বেছে নিয়েছে, যা কোনোভাবেই বরদাশত করা হবে না। তাদের হত্যার রাজনীতির পথ ধরেই তারা নির্বাচিত সংসদ সদস্য মঞ্জুরুল ইসলাম লিটনকে হত্যা করেছে।’
রাত সাড়ে ১০টার দিকে বামনডাঙ্গায় রংপুর রেঞ্জের অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মো. বশির আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। এ ঘটনায় কারা জড়িত থাকতে পারে তা দ্রুতই উদঘাটন করা হবে। পুলিশ তদন্ত শুরু করে দিয়েছে।’
এ দিকে রাতে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটজনকে আটক করা হয়েছে।
২০১৫ সালের ২ অক্টোবর গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার দহবন্ধ ইউনিয়নের গোপালচরণ এলাকায় এক শিশুকে গুলি করে সারা দেশে সমালোচনার মুখে পড়েন এমপি লিটন। তিনি তাঁর লাইসেন্স করা পিস্তল দিয়ে গোপালচরণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র সৌরভকে গুলি করেন।
এ ঘটনায় সৌরভের বাবা বাদী হয়ে ৩ অক্টোবর এমপি লিটনকে আসামি করে সুন্দরগঞ্জ থানায় মামলা করেন। এ ছাড়া এমপি লিটনের বিরুদ্ধে বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগে ৬ অক্টোবর আরেকটি মামলা করেন সুন্দরগঞ্জ উপজেলার উত্তর শাহাবাজ গ্রামের হাফিজার রহমান।
ওই ঘটনায় মামলার পর থেকে আত্মগোপনে ছিলেন এমপি লিটন। ওই বছরই আদালতে আত্মসমর্পণ করে কারাগারে যান। পরে জামিনে মুক্তি পান। লিটন এবারই প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি পেশায় ছিলেন ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার (মেরিন)। তিনি আনন্দ গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের পরিচালক।