রাঙামাটি হাসপাতালে ফাটল, সরিয়ে নেওয়া হলো রোগীদের
রাঙামাটি সদর হাসপাতালের ভবনে ফাটল দেখা দেওয়ায় মহিলা ও শিশু ওয়ার্ডের অর্ধশতাধিক রোগীকে জরুরিভাবে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। তাঁদের পার্শ্ববর্তী পুরুষ ওয়ার্ড ও সংক্রামক ওয়ার্ডে স্থানান্তর করা হয়েছে। বিষয়টি জানিয়েছেন সিভিল সার্জন স্নেহকান্তি চাকমা।
হাসপাতালের সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পুরোনো ভবনের ওপর বর্ধিত নতুন ভবন নির্মাণের চাপে এ ফাটল দেখা দেয়। রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের অর্থায়নে ১০০ শয্যাবিশিষ্ট রাঙামাটি সদর হাসপাতালের ওপর নতুন আরেকটি ফ্লোর নির্মাণকাজ প্রায় শেষ হয়ে এসেছে। সম্পূর্ণ ফ্লোর নির্মাণ না করে মহিলা ও শিশু ওয়ার্ডের ঠিক ওপরেই নির্মিত হচ্ছিল বর্ধিত ভবন।
শনিবার সকালে হাসপাতালে আসা লোকজন প্রবেশমুখেই নতুন নির্মিত ফ্লোরের ঠিক নিচের বিমটিতে বড় ধরনের ফাটল দেখতে পান এবং তাৎক্ষণিকভাবে পুরো হাসপাতালে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনা শুনে সিভিল সার্জন ডা. স্নেহকান্তি চাকমা, রাঙামাটি মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. টিপু সুলতানসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ছুটে আসেন। আসেন নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের ঠিকাদাররাও। তাৎক্ষণিক সভায় বসে রোগীদের দ্রুত সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
রাতে হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, শূন্য পড়ে আছে মহিলা ও শিশু ওয়ার্ড। এ সময় একজন রোগীর স্বজন রূপম তংচঙ্গ্যা জানান, দুপুরে হঠাৎ করেই রোগীদের দ্রুত সরানো শুরু হয়। জানতে চাইলে বলা হয়, ভবনে ফাটল দেখা দিয়েছে, তাই এ পদক্ষেপ।
হাসপাতালের স্টাফ নার্স জোসি দেওয়ান বলেন, ‘আমরা রাতে ডিউটি করতে এসে জেনেছি, হাসপাতালের মহিলা ও শিশু ওয়ার্ডের অংশে ফাটল দেখা দেওয়ায় রোগীদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছে, এর বেশি কিছু জানি না।’
জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. ওবায়দুর রহমান জানিয়েছেন, মহিলা ও শিশু ওয়ার্ডের ওই অংশে বিমে ফাটল দেখা দেওয়ায় জরুরি সভা করে প্রকৌশলীদের পরামর্শে রোগীদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
রাঙামাটির সিভিল সার্জন ডা. স্নেহকান্তি চাকমা জানিয়েছেন, অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে জরুরি সংস্কারকাজের প্রয়োজনে রোগীদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। রোববার সকালে প্রকৌশলীরা পরিদর্শন শেষে দেওয়া মতামতের ভিত্তিতে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
২০০৫ সালে জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) ‘আর্থকোয়াক রিস্ক রিডাকশন’ প্রোগ্রামের আওতায় রাঙামাটি শহরের ভবনগুলোর ওপর পরিচালিত এক জরিপে রাঙামাটি সদর হাসপাতালকে ঝুঁকিপূর্ণ ভবন হিসেবে সুনির্দিষ্ট করা হয়। তারপরও এই ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের ওপর নতুন করে আরো একটি ফ্লোর করার সিদ্ধান্তটি বিস্ময়কর বটে।