সম্মাননায় সমুজ্জ্বল ৪৬ ছাত্রী-শিক্ষক
জীবনে স্বীকৃতি পেয়েছেন অনেক। কিন্তু কিছু স্বীকৃতি বা সম্মাননা ঠিকই বুকের ভেতর তৈরি করে ভিন্ন এক দ্যোতনা।
আজ শনিবার সকালে রাঙামাটি সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সুবর্ণজয়ন্তীর গৌরবোজ্জ্বল আয়োজনে এমন স্বীকৃতি পেয়ে আবেগেই আপ্লুত হয়েছেন বিদ্যালয়টির কিছু প্রাক্তন ছাত্রী ও শিক্ষক। এঁদের অনেকেই উপস্থিত ছিলেন, অনেকেই ছিলেন না, কেউ বা চলে গেছেন পরপারে। যাঁরা ছিলেন না, তাঁদের প্রতিনিধিরা নিয়েছেন সম্মাননার স্মারক। এ সময় অনেক ছাত্রীর চোখেমুখেই ছিল আবেগ। আর ভালোবাসার ভিন্ন এক অনুভূতিই যেন চকচক করছিল। শুধু কি সম্মাননা পাওয়া ছাত্রীরা? এমন স্বীকৃতিতে উপস্থিত সব ছাত্রী, অতিথি কিংবা অন্যদের মনেও সৃষ্টি হয় ভিন্ন এক আবেশের।
সম্মাননা যাঁরা পেয়েছেন, তাঁদের মধ্যে ছিলেন স্কুলটির প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে দায়িত্বশীল এবং গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করা তিন প্রয়াত প্রধান শিক্ষক মুজিবুল হক, প্রতিমা চৌধুরী ও কাশ্মিরী বেগম। সাবেক ছাত্রীদের অত্যন্ত প্রিয় এই তিন প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে সম্মাননা পেয়েছেন জনপ্রিয় সাবেক প্রধান শিক্ষক অঞ্জুলিকা খীসা ও সাবেক সহকারী প্রধান শিক্ষক নিরূপা দেওয়ানও।
বিগত ৫০ বছরে স্কুলটির পক্ষ হয়ে জাতীয় পর্যায়ে নানা প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে পুরস্কার নিয়ে আসা ছাত্রী, জাতীয় পর্যায়ে হ্যান্ডবলে চ্যাম্পিয়ন হওয়া দলের সদস্যদের পাশাপাশি স্কুলের ছাত্রীদের মধ্যে এখন জনপ্রিয় মডেল ও অভিনেত্রী হিসেবে আলোচিত ছাত্রী অপর্ণা ঘোষকেও দেওয়া হয় সম্মাননা। ছিলেন জাতীয় ফুটবলের আলোচিত কোচ ও রেফারি জয়া চাকমাও।
একের পর এক সাবেক ছাত্রীরা যখন সম্মাননার স্মারক গ্রহণ করছিলেন, তখন মুহুর্মুহু করতালিতে চারপাশ জমিয়ে তোলেন উপস্থিত ছাত্রীরা। স্বীকৃতি পেয়ে নিজেদের আবেগ আর উচ্ছ্বাসের কথাও জানিয়েছেন তাঁরা।
যেসব শিক্ষককে সম্মাননা দেওয়া হয় তাঁরা হলেন সাবেক প্রধান শিক্ষক মুজিবুল হক, প্রতিমা চৌধুরী, কাশ্মিরী বেগম ও অঞ্জুলিকা খীসা, অনিতা চাকমা, নিরূপা দেওয়ান, মো. সলিমউল্লাহ। ছাত্রীদের মধ্য থেকে সংবর্ধিত হন নিলুফার আক্তার জাহান, কনকচাঁপা চাকমা, কাবেরী গায়েন, ফারহানা বিনতে আজিজ, বন্দনা দে, লাকী দে, তানজিনা নওশীন আক্তার, চৈতালী সমাদ্দার, অপর্ণা ঘোষ, আঁখি দে, হৃদিতা মাহমুদ, ফিফা চাকমা ও জয়া চাকমা।
একই সঙ্গে ১৯৮৫ ও ১৯৮৬ সালে সালে জাতীয় পর্যায়ে চ্যাম্পিয়ন হ্যান্ডবল দলের সদস্য রীনা দেওয়ান, মাইকোচি মগ, বীণা প্রভা চাকমা, শিমলা চাকমা, উৎপলা চাকমা, তহ্না চাকমা, মিনাক্ষী দে, প্রমীরা চাকমা, মিতা চাকমা, স্বপ্না মারমা, মিনু প্রু মারমা, শর্মিষ্ঠা চাকমা ও মা শৈ চিং রোয়াজা এবং ১৯৯৪ সালে চ্যাম্পিয়ন ও ১৯৯৫ সালে হ্যান্ডবলে রানার্সআপ হওয়া দলটির স্বর্ণা দেওয়ান, গীতা চাকমা, ইয়েন দে, শিল্পী দে, রুনু দাশ, শাম্মি আক্তার, নাজনীন আনোয়ার, ফাহমিতা মহসিন, শ্রদ্ধা চাকমা, রলি চাকমা, ময়না রায় (মরণোত্তর), শ্যামলী মারমা ও কোরি খীসাকে সম্মাননা দেওয়া হয়।