১৪ বছরেও বিচার শুরু হয়নি
নারায়ণগঞ্জের চাষাঢ়ায় আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে বোমা হামলার ১৪ বছর কেটে গেলেও এখনো বিচার শুরুই হয়নি। এক বছরেরও বেশি সময় আগে মামলায় অভিযোগপত্র দেওয়া হলেও অভিযোগ গঠন করা হয়নি। এ কারণে শুরুই হয়নি আলোচিত এই মামলার বিচার কাজ।
urgentPhoto
২০০১ সালে ১৬ জুন রাত পৌনে ৮টায় নারায়ণগঞ্জ শহরের চাষাঢ়ায় আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে ভয়াবহ বোমা হামলায় ২০ জন মারা যায়। আহত হয়েছিলেন সংসদ সদস্য শামীম ওসমানসহ অর্ধশত মানুষ।
নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে আজ মঙ্গলবার চাষাঢ়া স্মৃতিস্তম্ভে শ্রদ্ধা জানিয়েছে সর্বস্তরের মানুষ। এসেছিল ওই ঘটনায় নিহতের স্বজনরাও। আহতদের অনেকেই অশ্রুসজল চোখে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন স্মৃতিস্তম্ভে। স্মৃতিচারণা করেছেন ওই ঘটনার। আর এ জন্য দায়ী ব্যক্তিদের শাস্তি দাবি করেছেন। এ ছাড়া গভীর মমতায় কালো ব্যানার নিয়ে সহকর্মীদের স্মরণ করেন দলের নেতা-কর্মীরা। দিনটিকে নারায়ণগঞ্জ ট্র্যাজেডি দিবস হিসেবে পালন করেছেন তাঁরা।
বোমা বিস্ফোরণের একদিন পর ওই সময়ের শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক খোকন সাহা নারায়ণগঞ্জ সদর থানায় বিস্ফোরক দ্রব্য ও খুনের অভিযোগে দুটি মামলা করেন। মামলা দুটিতে জেলা বিএনপির সভাপতি তৈমূর আলম খন্দকারসহ ৩৭ জনকে আসামি করা হয়।
মামলার বাদী খোকন সাহা মনে করেন, বর্তমান প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার উদ্দেশে কোটালীপাড়ায় বোমা পুঁতে রাখা, রমনার বটমূল ও উদীচীর অনুষ্ঠানে বোমা হামলা, ২১ আগস্ট শেখ হাসিনার ওপর গ্রেনেড হামলা এবং নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে বোমা হামলা একই সূত্রে গাঁথা।
খোকন সাহা বলেন, ‘অপরাধীরা সর্বোচ্চ শাস্তি পেলেই নিহত ব্যক্তিদের স্বজন, আহত ব্যক্তি এবং মামলার বাদী হিসেবে আমি স্বস্তিবোধ করব।’
বছরের পর বছর কয়েক হাত বদল হয়ে দীর্ঘ তদন্ত শেষে জেলা পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) কর্মকর্তা ২০১৪ সালের মে মাসে বিএনপি নেতা তৈমূর আলম খন্দকারসহ ৩১ জনের নাম বাদ দিয়ে ছয়জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
আসামিরা হলেন হরকাতুল জিহাদের নেতা মুফতি আবদুল হান্নান, জঙ্গি নেতা ওবায়দুর রহমান, মহিবুল মুত্তাকিন ও তাঁর ভাই আনিসুল মোরসালিন, বিএনপি নেতা কাউন্সিলর শওকত হাসেম শকু ও যুবদল নেতার ভাই শাহাদাৎ উল্লাহ জুয়েল। মহিবুল ও আনিসুল ভারতের দিল্লির কারাগারে এবং জুয়েল ও মুফতি হান্নান ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে আটক আছেন। অপর দুজন জামিনে আছেন।
এ ব্যাপারে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি তৈমূর আলম খন্দকার বলেন, ‘দীর্ঘদিন পর এ অভিযোগপত্র কতটুকু গ্রহণযোগ্য হবে এটা একটা বিচার্য বিষয়। এ অভিযোগপত্রে যাঁরা নির্দোষ তাঁরা যেন খালাস পান। যাঁদের জীবন গেল, অঙ্গহানি হলো, পঙ্গু হলো তাঁরা যেন সঠিক বিচার পান।’
মামলার ধীরগতির ব্যাপারে নারায়ণগঞ্জের সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার এহসান উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘মামলায় এখন ধীরগতি নেই। মামলা এখন বিচারের প্রক্রিয়াতে চলে গেছে। বিজ্ঞ আদালত যখন স্বাক্ষীদের ডাকবে। স্বাক্ষীরা সাক্ষ্য দেবেন।’