চুয়াডাঙ্গায় ট্রাক-ভটভটির সংঘর্ষে গেল ১৩ প্রাণ

চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলায় ট্রাকের সঙ্গে ভটভটির সংঘর্ষে ১৩ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরো নয়জন।
আজ রোববার সকাল পৌনে ৭টার দিকে উপজেলার জয়রামপুরে চুয়াডাঙ্গা-দর্শনা সড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
দুর্ঘটনায় নিহত ব্যক্তিরা হলেন দামুড়হুদা উপজেলার বড় বলদিয়া গ্রামের আবদার, বিল্লাল, আকুব্বর, ইজ্জত আলী, নজির আলী, শান্ত, হাফিজুর, শফিকুল, বিল্লাল হোসেন, রফিকুল, জজ, লাল মোহাম্মদ ও শাহীন।
আহত ব্যক্তিরা হলেন আলী হোসেন, কালু, মজিবুর রহমান, জিয়াউর রহমান, সফিউদ্দিন, আতিকুল, শরিফুল, সোহরাব উদ্দিন ও নুর ইসলাম। তাঁরাও দামুড়হুদার বড় বলদিয়া গ্রামের বাসিন্দা। তাঁদের চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সকালে উপজেলার বড় বলদিয়া গ্রামের ২২ নির্মাণ শ্রমিক একটি ভটভটিতে করে কাজের জন্য আলমডাঙ্গা উপজেলার মুন্সীগঞ্জে যাচ্ছিলেন। পথে দামুড়হুদা উপজেলার জয়রামপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে বিপরীত দিক থেকে আসা ট্রাকের সঙ্গে ভটভটির মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই ভটভটির আট যাত্রী নিহত হন। আহত হন ১৪ জন।
পরে আহত ব্যক্তিদের চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছিল। কিন্তু এর আগে পথেই তিনজনের মৃত্যু হয়। এ ছাড়া রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে নেওয়ার পথে আরো দুজনের মৃত্যু হয়।
সদর হাসপাতালে ভর্তি আহত নুর ইসলাম জানান, ভটভটিতে করে তাঁরা ২২ জন আলমডাঙ্গার মুন্সীগঞ্জের মাথাভাঙ্গা নদীর ওপারে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) তত্ত্বাবধানে রাস্তার নির্মাণকাজে যাচ্ছিলেন। সে সময় তাঁরা দুর্ঘটনার কবলে পড়েন।
দুর্ঘটনার খবর পেয়ে চুয়াডাঙ্গার জেলা প্রশাসক (ডিসি) সায়মা ইউনুস সদর হাসপাতালে গিয়ে হতাহতদের স্বজনদের সান্ত্বনা দেন। লাশ দাফন ও আহতদের চিকিৎসার জন্য প্রত্যেক পরিবারকে ১০ হাজার টাকা করে দেওয়ার ঘোষণা দেন তিনি।
ওই সময় উপস্থিত ছিলেন জেলার সিভিল সার্জন ডা. রওশন আরা, দামুড়হুদা পৌরসভার মেয়র ওবায়দুর রহমান চৌধুরী, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (ডিডিএলজি) আনজুমান আরা, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আবদুর রাজ্জাক, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) দেব প্রসাদ পাল, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মৃণাল কান্তি , মদনা-পারকৃষ্ণপুর ইউনিয় পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান জাকারিয়া আলম ও হাউলী ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী শাহ মিন্টু।
চুয়াডাঙ্গার সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) কলিমুল্লাহ বলেন, ঘটনাস্থলেই আটজন ও হাসপাতালে পাঁচজন মারা গেছেন। ময়নাতদন্ত ছাড়াই প্রত্যেক পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে। ট্রাকটি জব্দ করা হয়েছে। এ ব্যাপারে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
চুয়াডাঙ্গা ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন ইনচার্জ আবদুস সালাম জানান, সংঘর্ষের পর তাঁরা দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধারকাজ শুরু করেন।
এ বিষয়ে মদনা-পারকৃষ্ণপুর ইউপি চেয়ারম্যান জাকারিয়া আলম জানান, হতাহত ব্যক্তিদের পরিবারকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১০ হাজার করে টাকা দেওয়া হয়েছে। ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশগুলো গ্রামে নেওয়া হয়েছে।