অবশেষে রেশমার লাশ এলো খুলনায়
দালালদের লোভনীয় ফাঁদে পড়ে ভাগ্যের চাকা ঘোরাতে গিয়ে অবশেষে লাশ হয়ে ফিরলেন খুলনার রূপসা উপজেলার নন্দনপুর গ্রামের গৃহবধূ রেশমা বেগম (৩৫)। তিনি ওই গ্রামের দেলোয়ার হোসেন দিলুর স্ত্রী।
আজ বুধবার ভোরে রেশমার লাশ ডুমুরিয়া উপজেলার শাহপুর ইউনিয়নের বর্নি গ্রামে তাঁর বাবার বাড়ি এসে পৌঁছায়। রেশমা বর্নি গ্রামের মো. শাহজাহান বাওয়ালির মেয়ে। রেশমার আবীর (৭) ও আমির (৪) নামের দুটি সন্তান রয়েছে।
রেশমার চাচাতো ভাই স্কুলশিক্ষক হাফিজুর রহমান সাগর ও দেলোয়ার হোসেন দিলুর ছোট ভাই কামাল হোসেন সকালে রেশমার লাশ আসার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ডুমুরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মশিউর রহমান বলেন, লাশ আসার খবর পেয়ে বাড়িতে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।
হাফিজুর রহমান সাগর জানান, রেশমার ছোট বোন শোকরা বেগম ঢাকা থেকে লাশ নিয়ে সকালে পৌঁছেছেন। তিনি আরো জানান, জর্ডান থেকে রেশমার লাশ রোববার বিকেল ৪টা ২৫ মিনিটে দেশে আসে এবং হযরত শাহজালাল (র.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের হিমাগারে রাখা হয়। রেশমার লাশ ঢাকায় আসে স্বামী দিলুর ঠিকানায়। কিন্তু দিলু লাশ আনতে না যাওয়ায় লাশ খুলনায় আনতে দেরি হয়েছে।
হাফিজুর রহমান সাগর বলেন, জর্ডান থেকে পাঠানো ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রেশমা আত্মহত্যা করেছেন। রেশমাকে ডুমুরিয়ায় তাঁর বাবার বাড়িতে দাফন করা হয়েছে।
দেলোয়ার হোসেন দিলুর ছোট ভাই কামাল হোসেন বলেন, নন্দনপুর গ্রামের দুই দালালকে ৭০ হাজার টাকা দিয়ে চলতি বছরের ১৫ এপ্রিল জর্ডানে গিয়েছিলেন তাঁর ভাবি রেশমা। ৩ জুন দেশে ফিরতে তিনি কান্নাকাটি শুরু করেন। ৮ জুন জর্ডানের বাংলাদেশি দূতাবাস থেকে জানানো হয়, রেশমা বেগমের লাশ পাওয়া গেছে। তিনি বলেন, ‘লাশ আসার খবর পেয়ে আমার ভাই রেশমার বাবার বাড়িতে গেছেন।’
রেশমার শ্বশুড়বাড়ি এলাকার প্রতিবেশীরা জানায়, রেশমার প্রতিবেশী নন্দনপুর গ্রামের নাসিমা বেগমের মেয়ের জামাই ফুলতলার জাকারিয়া বিদেশে লোক পাঠান। নাসিমা বেগম প্রায়ই বাড়িতে এসে রেশমাকে বিদেশে যাওয়ার জন্য বলতেন এবং নানা প্রলোভন দেখাতেন। একপর্যায়ে ৭০ হাজার টাকার বিনিময়ে মাসিক ১৫ হাজার টাকা বেতনে জর্ডানে যাওয়ার ব্যাপারে চুক্তি হয় তাঁদের। স্বামীকে না জানিয়ে তাঁর পাসপোর্ট ও ভিসা করেন রেশমার মা-বাবা। কিন্তু রেশমার স্বামী দেলোয়ার হোসেন দিলু তাঁর বিদেশ যাওয়ায় রাজি ছিলেন না।
এদিকে অভিযুক্ত দালাল ফুলতলার বাসিন্দা মো. জাকারিয়ার মুঠোফোন বন্ধ পাওয়ায় তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি।