সাতক্ষীরা সীমান্তে ব্যবসায়ীকে জবাই
সাতক্ষীরা সদর উপজেলার কুশখালী সীমান্ত থেকে ব্যবসায়ী আলমগীর হোসেনের জবাই করা লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) তাঁকে হত্যা করেছে পুলিশ এমন সন্দেহ করলেও বিজিবি তা উড়িয়ে দিয়েছে।
আজ রোববার সকালে কুশখালী হাইস্কুলের সামনে একটি পাটক্ষেতে লাশটি পড়ে থাকতে দেখে গ্রামবাসী পুলিশে খবর দেয়। আলমগীর কুশখালী দক্ষিণপাড়ার ময়নুদ্দিন ময়নার ছেলে। তিনি একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। একই সঙ্গে তিনি সুযোগ বুঝে ভারতীয় গরুর ব্যবসাও করেন বলে জানায় এলাকাবাসী।
কুশখালী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবদুর রায়হান বিশ্বাস জানান, শনিবার রাতে তারাবির নামাজ পড়ার উদ্দেশে আলমগীর বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান। এরপর থেকে তিনি নিখোঁজ ছিলেন।
আলমগীর সাতানি গ্রামের মাগফুর রহমানের সঙ্গে আমের ব্যবসা করতেন। তাঁর কোনো শত্রু ছিল না উল্লেখ করে চেয়ারম্যান বলেন, টাকার লোভে আলমগীর মাঝেমধ্যে ভারতীয় গরুর ব্যবসা করতেন। রাখাল হিসেবে ভারত থেকে গরুও আনতেন।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এমদাদ শেখ জানান, দরিদ্র হলেও আলমগীর গরু ব্যবসায়ী হিসেবে এলাকায় পরিচিত। গ্রামের দুই গরু ব্যবসায়ী আবদুল্লাহ ও জামালের সঙ্গে তাঁর ব্যবসায়িক সম্পর্ক ছিল।
ওসি সন্দেহ প্রকাশ করে বলেন, গরু ব্যবসার টাকা লেনদেনের ঘটনায় আলমগীরকে খুন করা হতে পারে। তিনি গোপন সূত্রে খবর জানতে পেরেছেন, শনিবার রাতে আলমগীর তাঁর সহযোগীদের সঙ্গে ভারতে গরু আনতে গেলে বিএসএফ তাঁকে কুপিয়ে হত্যা করে। পরে তাঁর সঙ্গীরা দায় এড়াতে লাশ পাটক্ষেতে ফেলে রেখে পালিয়ে যান।
ওসি জানান, আলমগীর হত্যার প্রকৃত রহস্য উদঘাটনে কাজ করছে পুলিশ। আবদুল্লাহ ও জামাল হোসেনকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানান তিনি। তাঁদের আটক করতে পারলে আরো তথ্য মিলবে বলে জানান ওসি।
বিজিবির কুশখালী কোম্পানি কমান্ডার নায়েক সুবেদার দেলোয়ার হোসেন জানান, ঘটনাস্থল কুশখালী থেকে ভারতীয় খলিসা সীমান্তের দূরত্ব প্রায় তিন কিলোমিটার। স্থানীয় কোনো ঘটনায় আলমগীর খুন হয়ে থাকতে পারেন।
এই হত্যার সঙ্গে বিএসএফের জড়িত থাকার সন্দেহ উড়িয়ে দিয়ে বিজিবি কর্মকর্তা আরো বলেন, রাতে অত দূর থেকে আলমগীরের লাশ কীভাবে আনতে পারে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবুল কালাম আজাদ জানান, জবাই করা ছাড়াও আলমগীরের দেহে অনেকগুলো ধারালো দায়ের কোপের চিহ্ণ পাওয়া গেছে। চেক লুঙ্গি ও সাদা শার্ট পরিহিত আলমগীর বিভিন্ন ধরনের ব্যবসার সঙ্গে জড়িত।
বিএসএফ এই হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে এমন সন্দেহ তাঁরও উল্লেখ করে এসআই বলেন, আলমগীরের সারা দেহ কুপিয়ে ঝাঁঝরা করে দেওয়া হয়েছে। আলমগীর হোসেনের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য সাতক্ষীরা হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কেউ গ্রেপ্তার হয়নি।