বিএনপির প্রতিনিধি সভায় মারামারি, ভাঙচুর
ঝিনাইদহ জেলা প্রতিনিধি সভা চলার মধ্যে বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ, মারামারি ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে।
আজ বুধবার বেলা ১১টার দিকে ঝিনাইদহ জেলা শহরের পৌর কমিউনিটি সেন্টারে এ ঘটনা ঘটে।
সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কেন্দ্রীয় মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান আসাদের শৈলকুপার সমর্থকরা সভাস্থলে ঢুকতে চেষ্টা করলে জেলা সভাপতি মসিউর রহমানের সমর্থকরা তাদের বাধা দেয়। এর সূত্র ধরে হামলা, ভাঙচুর ও সংঘর্ষ হয়। এমনকি চেয়ার ছোড়াছুড়ির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার জন্য উভয় পক্ষ পরস্পরকে দায়ী করেছেন।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, মসিউর রহমানের সভাপতিত্বে কোরআন তিলাওয়াতের মধ্য দিয়ে সকাল ১০টা ৪০ মিনিটে সভার কাজ শুরু করা হয়। সভার সভাপতি স্বাগত বক্তব্য রাখেন। এরপর প্রধান অতিথি বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নাল অবেদীন সূচনা বক্তব্য শেষ করার পরপরই শৈলকুপার আসাদ সমর্থকরা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন এবং তারা মিছিলসহ সভাস্থলে ঢুকে পড়ার চেষ্টা করে। এ সময় মসিউর রহমানের সমর্থকরা তাদের বাধা দেয়। সংঘর্ষকারীরা কমিউনিটি সেন্টারের ফটক ভেঙে ভেতরে ঢুকে পড়ার চেষ্টা করে। বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা বাইরে থেকে সভাস্থল লক্ষ্য করে জানালা দিয়ে ইটপাটকেল ছুড়ে মারে। ইটপাটকেলের আঘাতে কমিউনিটি সেন্টারের সব জানালার কাচ ভেঙে যায়। এতে হলের ভেতরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। বাইরে শুরু হয় মসিউর রহমান ও আসাদ সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ। হামলা প্রতিহত করতে কমিউনিটি সেন্টারের দ্বিতীয়তলায় উপস্থিত লোকজন চেয়ার তুলে আত্মরক্ষার চেষ্টা করেন। ইট ও কাচের আঘাতে সে সময় আহত হন অন্তত ১০ জন। এঁদের মধ্যে হরিণাকুণ্ডু উপজেলার ভায়না ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মইনউদ্দিনের নাম জানা গেছে। ইটের আঘাতে তাঁর মাথা ফেটে গেছে।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি জয়নাল আবেদীন বলেন, প্রতিনিধি সভায় যারা হামলা করেছে, তাদের বিরুদ্ধে দলীয়ভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জেলা বিএনপির সহসভাপতি আবদুল ওয়াহাব বলেন, এই ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত তারা কেউ বিএনপির লোক নয়। অ্যাডভোকেট আসাদ সরাসরি এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত।
আসাদ বিএনপির রাজনীতিতে বিশ্বাস করেন না বলে দাবি করেন তিনি।
সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ডা. কানিজ হোসেন জাহান ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হরেন্দ্র নাথের নেতৃত্বে বিপুলসংখ্যক পুলিশ সভাস্থলে চারিদিকে অবস্থান নেয় এবং হামলাকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। শেষ পর্যন্ত তুমুল উত্তেজনার মধ্য দিয়ে ফের সভার কাজ শুরু করা হয়। বেলা পোনে ১টার দিকে সভা শেষ করা হয়।
সদর থানার ওসি হরেন্দ্র নাথ জানান, বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে এ সংঘর্ষ হয়। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ এনেছে।
এ সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম মঞ্জু, কেন্দ্রীয় নেতা জয়ন্তকুমার কুণ্ডু, কণ্ঠশিল্পী মনির খান, সাবেক সাংসদ আবদুল ওহাব, সাবেক সাংসদ শহিদুজ্জামান বেল্টু, সহসাংগঠনিক সম্পাদক অমিত।