দৈনিক রানার সম্পাদক টুটুল আর নেই
যশোর থেকে প্রকাশিত দৈনিক রানার-এর সম্পাদক আর এম মঞ্জুরুল আলম টুটুল আর নেই। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে আজ বুধবার সকালে তিনি মারা যান (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তাঁর বয়স হয়েছিল ৪৮ বছর।
টুটুলের ঘনিষ্ঠ বন্ধু আজম খান টুলু এনটিভিকে জানান, সকালে অভয়নগর উপজেলার একতারপুরে নিজের মাছের খামারে নাশতার পর বুকে ব্যথা অনুভব করলে টুটুলকে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। চিকিৎসকদের পরামর্শে যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথেই তিনি মারা যান।
টুটুলের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব, সাংবাদিক, রাজনৈতিক-সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতা-কর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ শহরের বেজপাড়ায় দৈনিক রানার কার্যালয়ে ছুটে আসেন। সেখানে তাঁরা কান্নায় ভেঙে পড়েন।
টুটুলের মরদেহ বেলা ২টায় যশোর প্রেসক্লাবে নেওয়া হয়। সেখানে সাংবাদিকদের পাশাপাশি বিভিন্ন রাজনৈতিক-সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন টুটুলকে শেষ শ্রদ্ধা জানায়। এশার নামাজের পর বেজপাড়া তালতলা মসজিদের সামনে তাঁর জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। পরে বেজপাড়া কবরস্থানে দাফন করা হবে বলে পারিবারিকভাবে জানানো হয়েছে।
টুটুল সাংবাদিক গোলাম মাজেদের ছেলে ও সাংবাদিক আর এম সাইফুল আলম মুকুলের ভাই। লেখালেখির কারণে গোলাম মাজেদ এইচ এম এরশাদের শাসনামলে ১৯৮৪ সালে নিরাপত্তা বাহিনীর নির্যাতনে মারা যান। গোলাম মাজেদের মৃত্যুর পর তাঁর বড় ছেলে সাইফুল আলম মুকুল দৈনিক রানারের সম্পাদকের দায়িত্ব নেন। ১৯৯৮ সালের ৩০ আগস্ট রাতে নিজ কার্যালয়ের কাছে দুর্বৃত্তদের বোমা হামলা ও গুলিতে নিহত হন মুকুল। এরপর পত্রিকার হাল ধরেন টুটুল। ২০০৪-০৫ সাল পর্যন্ত দৈনিক রানার দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে ব্যাপক জনপ্রিয় ছিল। আর্থিক সংকটে পড়ে একপর্যায়ে পত্রিকাটি বাজার হারায়। বর্তমানে পত্রিকাটি অনিয়মিতভাবে প্রকাশিত হয়।
টুটুল প্রায় এক বছর ধরে তাঁর বন্ধু আজম খান টুলুর সঙ্গে অভয়নগর উপজেলার একতারপুরে একটি মাছের খামার ইজারা নিয়ে মাছের রেণু পোনা উৎপাদন করতেন। অধিকাংশ সময় তিনি সেখানেই থাকতেন। তিনি খুলনা বেতারের তালিকাভুক্ত শিল্পী ছিলেন। টুটুল বিভিন্ন সময়ে যশোর জেলা প্রেসক্লাবের কর্মকর্তা হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।