লংগদুতে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর পুনর্বাসনের দাবি ফখরুলের
রাঙামাটির লংগদু উপজেলায় পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এ ছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত দুই শতাধিক পরিবারের পুনর্বাসনের দাবি জানিয়েছেন তিনি।
লংগদুর ঘটনা নিয়ে আজ রোববার সকালে বিবৃতি দিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব। বিবৃতিতে তিনি এই দাবি জানান।
বিএনপির সহদপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপুর পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিবৃতিতে মির্জা ফখরুল বলেন, যুবলীগ নেতা ও মোটরবাইক চালক নুরুল ইসলাম নয়ন হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে গত ২ জুন লংগদু উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর দুই শতাধিক বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। রহস্যজনকভাবে নিহত নুরুল ইসলামের লাশ উদ্ধার করা হয় খাগড়াছড়ি জেলায়। এই লাশ নুরুল ইসলামের গ্রামের বাড়ি লংগদুতে নিয়ে যাওয়ার পর উত্তেজনা সৃষ্টি হয় এবং পাহাড়ি পল্লীতে আক্রমণের ঘটনা ঘটে।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আমরা নিরীহ পাহাড়িদের বাড়িঘরে নিষ্ঠুর হামলা ও অগ্নিসংযোগের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। আমরা নিহত নুরুল ইসলামের হত্যাকারীদের অবিলম্বে খুঁজে বের করে আইনের হাতে সোপর্দ করার জোর দাবি জানাচ্ছি।’
বিবৃতিতে মির্জা ফখরুল আরো বলেন, ‘বিএনপি পার্বত্য চট্টগ্রামের বাঙালি ও পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর হৃদ্যতাপূর্ণ সহাবস্থানে বিশ্বাসী। একটি হত্যাকাণ্ডের দায় সন্দেহবশত গোটা জনগোষ্ঠীর ওপর চাপিয়ে দিয়ে হিংস্র আক্রমণের ঘটনা কিছুতেই গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা উপদ্রুত এলাকায় শান্তি ও আস্থা ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য স্থানীয় প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। একই সঙ্গে দাবি জানাচ্ছি যে, ক্ষতিগ্রস্ত পাহাড়ি পরিবারগুলোর পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হোক।’
গত বৃহস্পতিবার লংগদু উপজেলা থেকে ভাড়ায় মোটরসাইকেল চালক ও স্থানীয় সদর ইউনিয়ন যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়ন দুজন যাত্রী নিয়ে দীঘিনালার উদ্দেশে রওনা হন। কিন্তু দুপুরের পর দীঘিনালার চারমাইল এলাকায় তাঁর মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশকে খবর দেন স্থানীয়রা। পরে সন্ধ্যায় ফেসবুকে নয়নের মৃতদেহের ছবি দেখে শনাক্ত করেন পরিবার ও বন্ধুরা।
শুক্রবার সকালে নয়নের লাশ লংগদুতে তাঁর গ্রামের বাড়ি বাইট্টাপাড়া আনা হয়। সেখান থেকে লংগদুবাসীর ব্যানারে কয়েক হাজার বাঙালির একটি বিশাল শোক মিছিল উপজেলা সদরের দিকে যাচ্ছিল জানাজার উদ্দেশে।
হঠাৎ একই উপজেলার ঝর্ণাটিলা এলাকায় মারফত আলী নামের এক বাঙালির বাড়িতে দুর্বৃত্তরা আগুন দিয়েছে—এমন খবর পেয়ে এই মিছিল থেকেই প্রধান সড়কের পাশের লংগদু উপজেলা জনসংহতি সমিতির কার্যালয়সহ আশপাশের পাহাড়িদের বাড়িঘরে ব্যাপক অগ্নিসংযোগ করা শুরু হয়।
আগের দিন রাতেই স্থানীয় পাহাড়িরা সম্ভাব্য গোলযোগের শঙ্কায় নিরাপদ স্থানে চলে যাওয়ায় কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। তবে পাহাড়ি অধ্যুষিত তিনটিলা পাড়ার ব্যাপক অগ্নিসংযোগ করা হয়।