ফরহাদ মজহার প্রতিবারই জানতে চাচ্ছেন, টাকা জোগাড় হয়েছে কি না
‘অপহৃত’ কবি ও প্রাবন্ধিক ফরহাদ মজহারের বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেছেন তাঁর স্ত্রী ও মেয়ে। আজ সোমবার রাত ১০টার দিকে রাজধানীর শ্যামলীর রিং রোডের ১ নম্বর বাসার তৃতীয় তলার ফ্ল্যাটে কথা বলেন স্ত্রী ফরিদা আখতার।
ফরিদা আখতার বলেন, ‘আজ সকাল থেকে ফরহাদ মজহারকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এরপর আমরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে গেলে তারা আমাদের যথেষ্ট সহযোগিতা করেছে।’
ফরিদা আখতার বলেন, “ভোরে লেখালেখির জন্য তিনি প্রতিদিনই রাত ৩টা থেকে ৪টার মধ্যে ঘুম থেকে উঠতেন। আজও আমি দেখেছি উনি ভোর বেলায় উঠে লেখালেখি করছেন। কিন্তু একটু পর দেখলাম উনি টেবিলে নেই। তারপর তাঁকে খোঁজাখুঁজি শুরু করি। ৫টা ২৯ মিনিটে তাঁর মুঠোফোন নম্বর থেকে আমার কাছে একটি ফোন আসে, ‘ওরা আমাকে নিয়ে যাচ্ছে, ওরা আমাকে মেরে ফেলবে।’ এই বলে ফোন কেটে দেন। তার পর থেকে তাঁর নম্বর বন্ধ। ৬টা ২১ মিনিটে আবার ফোন আসে। তখন উনি টাকার কথা বলেন। ভোর বেলা থেকে রাত ১০টা পর্যন্তও পাঁচ-ছয়বার ফোন এসেছে। কিন্তু প্রতিবারই শুধু টাকার কথা জানতে চাচ্ছেন, টাকা জোগাড় হয়েছে কি না।”
মানবাধিকারকর্মী ফরিদা আখতার বলেন, ‘পুলিশ জানিয়েছে, তারা প্রযুক্তি দিয়ে ওই নম্বরের লোকেশন চেক করতে পেরেছে। কিন্তু যেহেতু রাত বাড়ছে সেজন্য আমরা আতঙ্কিত। যেভাবেই হোক আজ রাতের মধ্যে তাঁকে আমরা ফেরত চাই।’ এ জন্য দেশি-বিদেশি মিডিয়া, সরকার, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় সবার কাছে আবেদন জানিয়েছেন ফরিদা আখতার।
এ সময় উপস্থিত ফরহাদ মজহার ও ফরিদা আখতারের মেয়ে সমতুলি হক বলেন, ‘আমরা চাচ্ছি, আমার বাবাকে যেন আজ রাতের মধ্যে ফেরত দেওয়া হোক। আমার বাবার বয়স ৭০ বছর। তিনি অনেক অসুস্থ। সে কারণে আমরা বেশি চিন্তিত। আমার বাবার মতো একজন ব্যক্তি যদি উধাও হতে পারেন, তবে দেশের অন্য লোকদের কী হবে?’
সকালে প্রথম দফায় ‘অপহরণকারীরা’ ৩৫ লাখ টাকা চায় বলে নিজের বাড়িতে ফোন করে জানিয়েছিলেন ফরহাদ মজহার। দুপুরের পর স্ত্রী ফরিদা আখতারের কাছে আবার ফোন আসে।
ফরহাদ মজহারের স্ত্রী ফরিদা আখতার বলেন, তিনি টেলিফোনে ফরহাদ মজহারকে জানিয়েছেন যে সবাইকে টাকার কথা বলা হয়েছে। সবাই জোগাড়ের চেষ্টা করছে। কিন্তু এখনো জোগাড় হয়নি। পরে ফরহাদ মজহার বলেন, ‘টাকা না হলে ওরা আমাকে মেরে ফেলবে।’