সেপ্টেম্বরে বাড়ছে গ্যাসের দাম
আগামী সেপ্টেম্বর মাসে গ্যাসের দাম বাড়ছে বলে জানিয়েছেন এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। কমিশন স্বাধীন হলেও এ খাতে ভর্তুকি থাকায় দাম বাড়ানোর আগে সরকারের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার প্রয়োজন হয় বলে জানিয়েছেন বিইআরসির এক সদস্য।
আর দাম বাড়ানোর ক্ষেত্রে আবাসিক গ্রাহকদের ওপরই সরকার বেশি জোর দিচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু।urgentPhoto
সবশেষ গ্যাসের দাম বেড়েছিল ২০০৯ সালের আগস্ট মাসে। এর তিন বছর পর অর্থাৎ ২০১২ সালে আবারও গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করেছিল সরকারি সংস্থা পেট্রোবাংলা। কিন্তু সেই প্রস্তাব যথাযথ না হওয়ায় পুনরায় প্রস্তাব দেওয়ার আহ্বান জানায় বিইআরসি।
পরে ২০১৪ সালের অক্টোবরে গ্যাসের দাম বাড়ানোর জন্য ফের প্রস্তাব পাঠায় পেট্রোবাংলাসহ গ্যাস বিতরণকারী প্রতিষ্ঠাগুলো।
সে সময় পেট্রোবাংলা আবাসিক খাতে এক চুলার জন্য বর্তমান মূল্য ৪০০ টাকার স্থলে দ্বিগুণেরও বেশি বাড়িয়ে ৮৫০ টাকা ও দুই চুলার ক্ষেত্রে ৪৫০ টাকার স্থলে এক হাজার টাকা করার প্রস্তাব দিয়েছিল। কিন্তু আবাসিক খাতের তুলনায় গ্যাসের দাম আনুপাতিক হারে কম বাড়ানোর প্রস্তাব দেওয়া হয় শিল্প, সার কারখানা, বিদ্যুৎ উৎপাদন কারখানা ও সিএনজির জন্য।
তার পরিপ্রেক্ষিতে আইনি বাধ্যবাধকতা অনুযায়ী এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে গণশুনানিও করে বিইআরসি। কিন্তু সেই সময়ের রাজনৈতিক অস্থিরতা আর নানা খুঁটিনাটি বিষয় যাচাই-বাছাই করায় এতদিন সিদ্ধান্তে আসতে পারেনি কমিশন। এখন সিদ্ধান্ত দেওয়ার মতো একটি অবস্থায় এসেছে তারা।
ছয় বছরেও গ্যাসের দাম না বাড়ানোকে ‘ভুল সিদ্ধান্ত’ উল্লেখ করে বিইআরসির সদস্য ড. সেলিম মাহমুদ এনটিভিকে বলেন, ‘২০০৯ সাল থেকে যে এ যাবৎ আমরা গ্যাসের দাম সমন্বয় করিনি সেটা আসলে আমাদের একটা ভুল সিদ্ধান্ত ছিল। এটা গ্যাস সেক্টরের জন্য কোনো সুখবর নয়। আমরা আগামী দুই মাসের মধ্যে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত দিতে পারব।’
‘আমরা জনগণের ক্রয়ক্ষমতার কথা চিন্তা করে কিন্তু ট্যারিফ ঘোষণা করছি। এখন কস্ট অব সাপ্লাই এবং রিয়েল ট্যারিফ- এ দুয়ের পার্থক্য সমন্বয় করতে হয় ভর্তুকির মাধ্যমে।’
সেই ভর্তুকিটা দেবে সরকার। সরকারের ভর্তুকি দেওয়ার ক্ষমতা কতটুকু আছে সেটা জানার জন্যই তাদের সঙ্গে আলোচনা করার প্রয়োজন হয় বলে জানান সেলিম মাহমুদ।
আর বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ মনে করেন, দেশের গ্রাহকদের সাশ্রয়ী মূল্যে গ্যাস দেওয়ার জন্যই দাম বাড়ানো প্রয়োজন। তিনি এনটিভিকে বলেন, ‘আমি তো চাই গ্যাসের দাম বাড়ুক। একটা চুলা ব্যবহার করে একজন গ্রাহক ৪০০ টাকা দিচ্ছে সারা মাসে। বিপরীতে যদি তিনি সিলিন্ডার গ্যাস ব্যবহার করেন তাহলে তাঁকে এক হাজার ২০০ টাকা দিতে হবে।’
‘সুতরাং এখানে একটা বিশাল তারতম্য রয়ে গেছে। যাদের সামর্থ্য আছে এক হাজার ২০০ টাকা দেওয়ার, তারা দিচ্ছে ৪০০ টাকা। আর যাদের সামর্থ্য নেই তারা দিচ্ছে এক হাজার ২০০ টাকা। আমরা এই জায়গায় সমন্বয় করতে চাই। এ ক্ষেত্রে আমরা জোর দিচ্ছি আবাসিক খাতের গ্যাসের ক্ষেত্রে।’ যোগ করেন প্রতিমন্ত্রী।
তবে বরাবরই গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির বিরোধিতা করে আসছে দেশে বামপন্থী সংগঠনগুলো।