উৎপাদনে অধিকাংশ কারখানা, আছে বিক্ষোভ-অবরোধও
শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ায় হাজিরা বোনাস বাড়ানোসহ শ্রমিকদের ১৮ দফা দাবি পূরণের যৌথ ঘোষণার পর অধিকাংশ কারখানা উৎপাদন ফিরেছে। তবে, বন্ধ থাকা পোশাক কারখানা খুলে দেওয়া, শ্রমিকদের নামে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহার ও ন্যূনতম মজুরি বাড়িয়ে ২২ হাজার টাকায় উন্নীত করার দাবিতে কয়েকটি কারখানার নতুন করে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা।
আজ শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সকালে আশুলিয়ার লুসাকা গ্রুপের প্রতিষ্ঠান বেক নিট লিমিটেড নামের তৈরি পোশাক কারখানা থেকে শুরু হয় উত্তেজনার। গত ৯ সেপ্টেম্বর মালিকপক্ষ কারখানার ২৭ জন শ্রমিকের নামে আশুলিয়া থানায় একটি মামলা করে। পরে এই মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে শ্রমিকরা আন্দোলন করলে গত বৃহস্পতিবার কারখানা খুলে দেওয়ার পর মালিকপক্ষ জানায়, মামলা তুলে নেওয়া হয়েছে। যদিও শ্রমিকরা মামলা প্রত্যাহারের প্রমাণপত্র চাইলে তা দেখাতে ব্যর্থ হয় মালিকপক্ষ। এ নিয়ে চলে শোরগোল।
আজ সকালে কারখানায় কাজে যোগ দিতে গিয়ে শ্রম আইনের ১৩(১) ধারায় কারখানা বন্ধের নোটিশ দেখে ক্ষুব্ধ হয় শ্রমিকরা। এ সময় তারা আশপাশের কয়েকটি কারখানার শ্রমিকদের নিয়ে এসে সড়কে অবস্থান নিয়ে মামলা প্রত্যাহার এবং বন্ধ কারখানা খুলে দেওয়ার দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করে। এসময় বাইপাইল-আবদুল্লাহপুর সড়কের জিরাব এলাকায় যান চলাচল বন্ধ থাকে।
শিল্প পুলিশ আশুলিয়া জোনের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সারওয়ার আলম জানান, আশুলিয়ার টঙ্গাবাড়ী মাতবার বাড়ি এলাকায় ‘কাজ নেই, বেতন নেই’ শ্রম আইনের ১৩(১) ধারার বেশ কিছুদিন ধরে বন্ধ রয়েছে মন্ডল ফ্যাশন লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটি সিরাজগঞ্জ-৫ (বেলকুচি-চৌহালী) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও বেলকুচি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল মোমিন মন্ডলের মালিকানাধীন। কারখানা খুলে দেওয়ার দাবিতে সকাল থেকে প্রায় এক হাজার ২০০ শ্রমিক কারখানার সামনে বিক্ষোভ করেন। একই দাবিতে বিক্ষোভ করেন ম্যাংগো টেক্সট লিমিটেড নামের তৈরি পোশাক কারখানার ৭০০ শ্রমিক। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি খন্দকার রফিকুল ইসলাম বলেছেন, ভাঙচুরসহ অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য কিছু কারখানা বন্ধ রাখা হয়েছে। নিরাপত্তাসহ অন্যান্য বিষয় বিবেচনা করে সময়মতো কারখানা খুলে দেওয়া হবে। তবে এখন কারখানা খোলার দাবিতে যেমন বিক্ষোভ করছেন, খোলার পর তারা যদি সত্যিকার অর্থে কাজের পরিবেশ ফিরিয়ে আনেন তাহলে আর কারখানা খুলতে বাধা নেই। কিন্তু দেখা যাচ্ছে উল্টোটা। যেকোনো অজুহাতে এখনই বেতন বাড়াতে হবে এমন দাবি তুলে হাজিরা দেওয়ার পরেই কাজ বন্ধ রাখা হচ্ছে। এতে মালিকপক্ষের ক্ষতি হচ্ছে। সরকার যেখানে শ্রমিকদের সব দাবি মেনে নিয়েছে, সেখানে তাদের স্বতঃস্ফূর্তভাবে কাজের পরিবেশ ফিরিয়ে আনার বিষয়ে মনোযোগী হওয়ার কোনো বিকল্প নেই।