ধর্ষণের শিকার অন্তঃসত্ত্বা কিশোরীর দায়িত্ব নিল উপজেলা প্রশাসন
গাজীপুরে ধর্ষণের শিকার হয়ে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়া তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী এক কিশোরীর দায়িত্ব নিয়েছে শ্রীপুর উপজেলা প্রশাসন।
আজ সোমবার দুপুরে ওই শিশুকে উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করান শ্রীপুরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রেহেনা আকতার। তিনি জানান, জেলা প্রশাসকের নির্দেশে এখন থেকে ওই শিক্ষার্থীর লেখাপড়া, চিকিৎসা, নিরাপত্তাব্যবস্থাসহ সন্তান জন্ম নিলে তার প্রসব ও পরবর্তী পুনর্বাসনের দায়িত্ব পালন করবে শ্রীপুর উপজেলা প্রশাসন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মইনুল হক খান জানান, মেয়েটি এখন অপুষ্টিতে ভুগছে। তার যথাযথ চিকিৎসা দরকার। উপজেলা হাসপাতালের পক্ষ থেকে তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে। আজ তার কিছু পরীক্ষা করা হয়েছে। পূর্ণাঙ্গ পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর জানা যাবে সে আসলে কত মাসের অন্তঃসত্ত্বা। এরপর তার গর্ভপাত ঘটানো হবে কি না, গর্ভপাত করার মতো শারীরিক অবস্থা আছে কি না এসব জানা যাবে।
পুলিশ ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শ্রীপুরের সাইটালিয়া দাখিল মাদ্রাসার তৃতীয় শ্রেণির ওই ছাত্রীকে মাদ্রাসায় আসা-যাওয়ার পথে একই গ্রামের নূরু মিয়ার ছেলে আমানুল্লাহ (২৩) উত্ত্যক্ত করতেন। গত ৭ জুন শিশুটিকে ধরে নিয়ে যান আমানুল্লাহ। এরপর মোল্লাখালীর টেক জঙ্গলে ধর্ষণ করেন তাকে। এই ঘটনা কাউকে জানালে জানে মেরে ফেলার হুমকিও দেন আমানুল্লাহ। এর পর থেকে আমানুল্লাহ সময়-সুযোগমতো প্রায়ই শিশুটিকে ভয় দেখিয়ে ধর্ষণ করতেন। এতে একসময় ওই ছাত্রী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। এই ঘটনা এলাকায় জানাজানি হলে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। বিভিন্ন গণমাধ্যমে ঘটনাটির সংবাদ প্রকাশ হলে বিষয়টি গাজীপুরের জেলা প্রশাসক ড. দেওয়ান মোহাম্মদ হুমায়ুন কবীরের নজরে আসে। তাঁরই নির্দেশে শ্রীপুরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আজ শিশুটিকে বাড়ি থেকে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য নিয়ে যান।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক ড. দেওয়ান মোহাম্মদ হুমায়ুন কবীরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, মানবিক দিক বিবেচনায় তাঁরা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মেয়েটির লেখাপড়া, চিকিৎসা ও পুনর্বাসনসহ সব ধরনের দায়িত্ব নিয়েছেন।
গত ১৪ সেপ্টেম্বর মায়ের কাছে ধর্ষণের বিষয়টি প্রকাশ করে ওই কিশোরী। এরপর ২২ সেপ্টেম্বর তার মা বাদী হয়ে শ্রীপুর থানায় মামলা করেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্ত শ্রীপুর থানার উপপরিদর্শক এখলাস উদ্দিন জানান, ভিকটিমের ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। আদালত তার জবানবন্দিও নিয়েছেন। তবে মামলার পর থেকে আসামি আমানুল্লাহ পলাতক। তাঁকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে বলেও জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।