‘শিশুবিবাহমুক্ত কালীগঞ্জ থেকে শিক্ষা নিতে হবে’
শিশুবিবাহ মুক্তকরণে সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলা থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে সারা দেশে এই দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে সামাজিক আন্দোলন জোরদার করতে হবে। সরকারি-বেসরকারি সব পর্যায় থেকে উদ্যোগ নিয়ে ২০২১ সালের মধ্যে ১৫ বছরের নিচের শিশুবিবাহ নির্মূল এবং ২০৪১ সালের মধ্যে ১৮ বছরের নিচে শিশুবিবাহ শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনা জরুরি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
শিশুবিবাহরোধে জাতীয় কর্মপরিকল্পনার লক্ষ্যে আজ সোমবার সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলায় অনুষ্ঠিত খুলনা বিভাগীয় পর্যায়ের এক কর্মশালায় এসব কথা বলেছেন বিভাগীয় কমিশনার মো. আবদুস সামাদ।
বিভাগীয় কমিশনার বলেন, ১৮ বছর বয়সের আগে যাদের বিয়ে ভেঙে গেছে তাদের শিক্ষা, আয়বর্ধক কর্মসংস্থান এবং যথাসময়ে বিয়ের ব্যাপারে সবার সহযোগিতা থাকতে হবে। নারী উন্নয়ন ফোরামের আওতায় নারী তহবিল গঠন করে তাদের সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখা সম্ভব। এ জন্য বছরব্যাপী কর্মসূচি গ্রহণে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, শিক্ষক, মসজিদের ইমাম, মন্দিরের পুরোহিতসহ সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে। এ ছাড়া শিশুবিবাহ মুক্তকরণের এই বিরল সাফল্যকে ধরে রাখতে নিয়মিত তদারকির ব্যবস্থা করতে হবে।
মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে কালীগঞ্জ উপজেলা মিলনায়তনে আয়োজিত কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মো. নাজমুল আহসান। কর্মশালায় আরো বক্তব্য দেন যুগ্ম সচিব শেখ আবদুর রউফ, উপসচিব খলিলুর রহমান কাগুজি, কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ ওয়াহেদুজ্জামান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ ফারুক আহমেদ, সহকারী পুলিশ সুপার মীর মনির হোসেন, ইউনিসেফের শিরিন হুসেইন ও মো. কফিলউদ্দিন প্রমুখ।
এ সময় কালীগঞ্জের ১২টি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান, সাংবাদিক, মসজিদের ইমাম, মন্দিরের পুরোহিত, সামাজিক নেতা, সরকারি ও বেসরকারি কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
খুলনা বিভাগীয় কমিশনার আরো বলেন, শারীরিক ও মানসিক উন্নয়ন না হওয়ায় মেয়েদের বিয়ে না দেওয়ার ব্যাপারে অভিভাবক থেকে শুরু করে সামাজিক নেতা ও জনপ্রতিনিধিদের সচেতন থাকতে হবে। এ ব্যাপারে বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও ধর্মীয় নেতারাও উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে পারেন। নিজ এলাকায় কেউ বাল্যবিবাহে সম্মতি দেব না এমন অঙ্গীকার করে সেসব মেয়েদের শিক্ষা ও আর্থসামাজিক উন্নয়নে বছরব্যাপী কর্মপরিকল্পনা হাতে নিতে হবে।
গত ২৩ মার্চ সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলাকে বাংলাদেশের প্রথম শিশুবিবাহমুক্ত মডেল উপজেলা হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।
কর্মশালায় খুলনা বিভাগে শিশুবিবাহের বর্তমান ও অতীত চিত্র তুলে ধরে বলা হয়, ২০০৬ সাল থেকে ২০১২-২০১৩ সাল পর্যন্ত বাল্যবিবাহের প্রবণতা কমতির দিকে রয়েছে।