নওগাঁয় আল-আরাফাহ ব্যাংক ব্যবস্থাপকের বিরুদ্ধে মামলা
প্রায় আড়াই কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে নওগাঁর মহাদেবপুরে আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপক মো. রবিউল আলমের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
গত ২ আগস্ট সাহারা চালকলের মালিক সালাহ উদ্দীন আহম্মেদ সবুজ নওগাঁর জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম নীলা কর্মকারের আদালতে মামলাটি দায়ের করেন।
মামলার বিবরণে সূত্রে জানা যায়, উপজেলা সদরের ফাজিলপুর এলাকার সালাহ উদ্দীন আহম্মেদ সবুজ আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের মহাদেবপুর শাখা থেকে প্লেজ লোন (এক ধরনের শর্তসাপেক্ষে ঋণ) নিয়ে ১৮ হাজার ৩০০ বস্তা স্বর্ণা ধান কিনেন। ব্যাংক ব্যবস্থাপকের উপস্থিতিতে তিনি এ চাল নিজস্ব গুদামে রাখেন। ধান গুদামজাত করার পর ব্যাংক গুদামের তালা সিলগালা করে চাবি নিয়ে যান ব্যবস্থাপক রবিউল। চালের নিরাপত্তা রক্ষার্থে একজন দারোয়ানও নিয়োগ করেন তিনি।
বিবরণে আরো বলা হয়, সম্প্রতি শাখা ব্যবস্থাপক রবিউল আলম ধান বিক্রি করে ঋণ পরিশোধ করতে সবুজকে তাগিদ দেন। সবুজ কয়েকদিন সময় প্রার্থনা করলে তা দিতে রাজি হননি রবিউল। তিনি থানা পুলিশের সহায়তায় তালা খুলে গত ২৮ জুন থেকে ৩ জুলাই পর্যন্ত সময়ে গুদামে সংরক্ষণ করা সব ধান বিসমিল্লাহ অটোমেটিক রাইস মিলের মালিক মো. আবদুর রাজ্জাকের কাছে বিক্রি করে দেন।
সালাহ উদ্দীন অভিযোগ করে বলেন, বর্তমানে প্রতি মণ স্বর্ণা ধান ৮২৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। সে হিসেবে ১৮ হাজার ৩০০ বস্তায় থাকা ৩৬ হাজার ৬০০ মণ ধানের দাম তিন কোটি এক লাখ ৯৫ হাজার টাকা। কিন্তু রবিউল তাঁকে মাত্র ৫৭ লাখ ৬ হাজার ১৩৫ টাকা জমা দেখিয়েছেন। তিনি আরো বলেন, ব্যাংক ব্যবস্থাপক রবিউল আলম তাঁর দুই কোটি ৪৪ লাখ ৮৮ হাজার ৮৬৫ টাকা আত্মসাৎ করেছেন।
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে রবিউল আলম এনটিভিকে বলেন, ১৮ হাজার ৩০০ বস্তায় ৩৬ হাজার ৬০০ মণ ধান থাকার কথা থাকলেও গুদামের তালা খুলে মাত্র ১০ হাজার ৩৭৪ মণ ধান পাওয়া গেছে। ওই ধানগুলো ৫৫০ টাকা মণ দরে বিক্রি করে ৫৭ লাখ ৬ হাজার ১৩৫ টাকা পাওয়া গেছে যা সালাহ উদ্দীন সবুজের লোন অ্যাকাউন্টে জমা করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে কোনো অনিয়ম করা হয়নি।
তবে ১০ হাজার ৩৭৪ মণ ধান ৫৫০ টাকা দরে বিক্রি করলে ৫৭ লাখ পাঁচ হাজার ৭০০ টাকা হয়। এ ছাড়া ব্যাংকের দারোয়ান থাকতে গুদাম সিলগালা করা এবং চাবি ব্যাংকের কাছে থাকলেও ৩৬ হাজার ৬০০ মণ ধান কীভাবে ১০ হাজার ৩৭৪ মণে নেমে আসে?—এমন প্রশ্নেরও কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি ওই ব্যাংক কর্মকর্তা।