মুস্তাফিজকে ছুঁয়ে বিস্ময় কাটাচ্ছে গ্রামের মানুষ!
চার মাস আগেও নিজ এলাকার খুব কম মানুষই তাঁকে চিনত। তবে এই কয়েক মাসেই ক্রিকেট বিশ্বে আলোড়ন তুলে নিজেকে চিনিয়েছেন তিনি। এলাকার অপরিচিত তরুণটি এখন দেশের সেরা আর বিশ্বজুড়ে তাঁর পরিচিতি। বলা হচ্ছে সাতক্ষীরার প্রত্যন্ত গ্রাম তেঁতুলিয়ার বিস্ময়কর ফাস্ট বোলার মুস্তাফিজুর রহমানের কথা।
জেলার প্রত্যন্ত গ্রাম তেঁতুলিয়ার সেই বিস্ময়বালক যিনি দৈনিক ৮০ কিলোমিটার পথ মোটরবাইকে পাড়ি দিয়ে সাতক্ষীরায় কিছুদিন আগেও আসতেন প্রশিক্ষণ নিতে, সেই মুস্তাফিজই এখন ক্রিকেট-তারকা।
উইকেট শিকারি, কাটার মাস্টার, সাতক্ষীরা এক্সপ্রেস, বিস্ময়বালক আর ভারত, পাকিস্তান ও আফ্রিকাবধের নায়ক মুস্তাফিজ এখন সাতক্ষীরায়।
চার মাস পর আজ শনিবার নিজের এলাকায় গেছেন মুস্তাফিজ। আর তাঁর আগমনে এলাকায় যেন আনন্দের বন্যা বইছে। যেখানেই যাচ্ছেন ভিড় করছেন এলাকাবাসী। কাছ থেকে একনজর দেখে, একটু ছুঁয়ে, কথা বলে বিস্ময় কাটাচ্ছেন তাঁরা।
কয়েকদিনের ছুটিতে নিজ গ্রামে আসার অনুভূতির সঙ্গে নিজেকে হারিয়েও ভুলে যাননি আগামী দিনগুলোতে মাঠে আরো ভালো করার কথাটি। সেই সঙ্গে নিজের লক্ষ্য কী এবং বাংলাদেশের ক্রিকেটকে কেমনভাবে দেখতে চান তা নিয়েও কথা বললেন সাতক্ষীরার ক্রিকেট-বিস্ময় মুস্তাফিজুর রহমান। আর বাবা-মায়ের সঙ্গে ঈদ করতে না পারার ব্যথাটা দূর করে এবার সবাইকে নিয়ে ঈদের আনন্দে মেতে উঠতেও চাইলেন তিনি।
নিজের নামের পাশে কয়েকটি খেতাব পেয়ে নিজের অনুভূতির কথা জানাতে গিয়ে মুস্তাফিজ বলেন, ‘খুব ভালো লাগছে। দোয়া করবেন ভবিষ্যতে যেন আরো ভালো করতে পারি। টেস্টকে যেন আরো এগিয়ে নিতে পারি।’
যে মাঠে ট্রেনিং নিতেন সেই মাঠেই স্টার হিসেবে আসতে পেরে ক্রিকেট কোচ ও ভাই মোকলেছুর রহমান পল্টুকে পেয়ে আনন্দে আত্মহারা মুস্তাফিজ। তাঁর কোচ, সিলেক্টর এবং জেলা ক্রীড়া সংস্থার সবাইকেই জানালেন তাঁর বিনম্র শ্রদ্ধার কথা, ‘সাতক্ষীরা জন্মস্থান, তাই যেখানেই থাকি সেই মাটি আমাকে সব সময় ডাকে।’
ক্রিকেটে সাতক্ষীরাকে আরো এগিয়ে নিতে চাওয়ার বাসনার কথা জানিয়ে মুস্তাফিজ বললেন, ‘এখানে সৌম্য সরকার, রবিউল ইসলাম শিপলু আর আমিই শেষ নয়, আরো ভালো ক্রিকেটার এখানে গড়ে উঠুক সবার সহায়তা নিয়ে।’
সামনে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজ। এতে খেলতে পরিকল্পনা তো কিছু থাকবেই। বাংলাদেশের ক্রিকেট ভবিষ্যৎ খুবই উজ্জ্বল বলে জানালেন এই বাঁ-হাতি বোলার।
জেলাবাসীর পক্ষ থেকে সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসক তাঁকে অনাড়ম্বর সংবর্ধনা জানাতে গিয়ে বললেন, ‘মুস্তাফিজ শুধু সাতক্ষীরা কিংবা বাংলাদেশের নন, তিনি বিশ্বক্রিকেটের একজন কীর্তিমান খেলোয়াড়।’
আজ শনিবার দুপুরে সাতক্ষীরার সার্কিট হাউসে ফুল দিয়ে অভিনন্দন জানোনো হয় মুস্তাফিজকে। এ সময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক এ এস এম এহতেশামুল হক, এনডিসি আবু সাঈদ, জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক শেখ নিজামউদ্দিন, কোচ মুফাচ্ছিনুল হক তপু, আলতাফ হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।