জনকণ্ঠ সম্পাদকের আদালত অবমাননার শুনানি বৃহত্তর বেঞ্চে
দৈনিক জনকণ্ঠের সম্পাদক মোহাম্মদ আতিকউল্লাহ খান মাসুদ ও নির্বাহী সম্পাদক স্বদেশ রায়ের আদালত অবমাননার শুনানি আগামীকাল সোমবার বৃহত্তর বেঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে।
আজ রোববার প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে আপিল বিভাগের চার সদস্যের বেঞ্চ প্রথম দিনের শুনানি শেষে এ দিন নির্ধারণ করেন। এই বেঞ্চের অপর সদস্যরা হলেন বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।
আগামীকাল আপিল বিভাগের সাত সদস্যের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে এ শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।
আজ আদালত অবমাননার প্রথম দিনের শুনানি শেষ হয়। জনকণ্ঠের সাংবাদিকদের পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন অ্যাডভোকেট সালাহউদ্দিন দোলন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।
সকাল ৯টায় রুলের শুনানির আগে জনকণ্ঠের পক্ষ থেকে তিনটি আবেদন করা হয়। প্রথম আবেদনে রুলের শুনানি থেকে প্রধান বিচারপতিকে বাদ দিয়ে বেঞ্চ গঠন করতে বলা হয়। আদালত সে আবেদন নামঞ্জুর করেন। পরে রুলের শুনানি শুরু হয়। বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত শুনানি শেষে আদালত বলেন, ‘এ বিষয়ে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, বৃহত্তর বেঞ্চে শুনানি করব। কারণ, এখানে বিচার বিভাগের স্বাধীনতার সততা জড়িত। বিচার বিভাগের সততা কাচের দেয়ালের মতো নয় যে একটি ইট ঠুকে মারলে সেটা ঝনঝন করে পড়ে যাবে। এ বিবেচনায় আমরা এটা বৃহত্তর বেঞ্চে শুনব।’
এ বিষয়ে আইনজীবী সালাহউদ্দিন দোলন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আদালত অবমাননার অভিযোগে রুলের শুনানিতে তিনটি আবেদন দাখিল করেছিলাম। প্রথম আবেদনে আমরা বলেছি, যেহেতু প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাই এ মামলায় তিনি শুনানিতে অংশ গ্রহণ করতে পারেন না। কিন্তু আদালত আমাদের এই আবেদন খারিজ করেছেন। এর পর মামলাটির শুনানি শুরু হয়েছে। আমরা মামলার শুনানির আগে লিখিতভাবে সব তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপন করেছি।’
দোলন বলেন, ‘বিচারপতির সঙ্গে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর পরিবার দেখা করেছে, সে বিষয়ে তথ্য-উপাত্ত রয়েছে। কিন্তু লিখিতভাবে তা উপস্থাপন করেছি। কালকের মধ্যেই আমাদের কাছে থাকা ডকুমেন্টগুলো এবং ২৯ জুলাইয়ের পর আদালত-সংক্রান্ত জনকণ্ঠের সব সংবাদ আদালতে উপস্থাপন করতে বলা হয়েছে।’
এ বিষয়ে শুনানি শেষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম সাংবাদিকদের বলেন, ‘জনকণ্ঠ যা করেছে তাতে আদালত অবমাননা করা হয়েছে। এখন এটাকে আরো গুরুতর পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। আদালত একটি ইনস্টিটিউশন। আদালতের ওপর মানুষের আস্থা নষ্ট হয়, সাংবাদিকদের এমন কাজ করা উচিত নয়।’
অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘যেসব সাংবাদিক আদালতে আসেন না, এয়ারকন্ডিশন রুমে বসে অন্যের কাছ থেকে শুনে রিপোর্ট লেখেন, তাঁদের জন্য আমার দুঃখ হয়।’
এর আগে মামলার শুনানি সকাল ৯টায় শুরু হয়। এ সময় জনকণ্ঠের সম্পাদক মোহাম্মদ আতিকউল্লাহ খান মাসুদ ও নির্বাহী সম্পাদক স্বদেশ রায় উপস্থিত ছিলেন।
গত ১৬ জুলাই জনকণ্ঠের সম্পাদকীয়তে বলা হয়, সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর পরিবার প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছে।
বিচারাধীন বিষয়ে লেখা প্রকাশ করায় গত ২৩ জুলাই দৈনিক জনকণ্ঠের সম্পাদক মোহাম্মদ আতিকউল্লাহ খান মাসুদ ও নির্বাহী সম্পাদক স্বদেশ রায়কে তলব করেন আপিল বিভাগ। একই সঙ্গে জনকণ্ঠের এ দুই সাংবাদিককে কেন দণ্ড দেওয়া হবে না, এ মর্মে রুল জারি করেন আদালত।