৩ ফেব্রুয়ারির সভা থেকে পিছিয়ে এলেন শামীম ওসমান
আগামী ৩ ফেব্রুয়ারি আওয়ামী লীগ ও এর সব সহযোগী সংগঠনের সব পক্ষের নেতাদের নিয়ে একটি বড় সভা করতে চেয়েছিলেন নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে আওয়ামী লীগদলীয় সংসদ সদস্য এ কে এম শামীম ওসমান। তবে সেই কর্মসূচি থেকে পিছিয়ে এসেছেন তিনি।
৮ ফেব্রুয়ারি বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার রায়ের পরই তাঁর পরবর্তী কর্মসূচী জানাবেন বলে জানিয়েছেন শামীম ওসমান।
আজ মঙ্গলবার বিকেলে জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে আওয়ামী লীগ-সমর্থিত সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদ প্যানেলের পক্ষে প্রচারণা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন শামীম ওসমান।
শামীম ওসমান বলেন, ‘গত তিন দিন আগে আমরা একটা ঘোষণা দিয়েছিলাম। এবং আমিই ঘোষণা দিয়েছিলাম যে, নারায়ণগঞ্জের প্রত্যেকটা উপজেলার, আমাদের তৃণমূলের সকল নেতাকর্মীর চাহিদার ভিত্তিতে,আমাদের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি যারা ছিলেন, প্রত্যেকটা ইউপি চেয়ারম্যান,আমাদের দলের কাউন্সিলর, জেলা পরিষদের মেম্বার, এবং অঙ্গ সংগঠনের সবার উপস্থিতিতে আমরা একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম, যে আগামী ৩ তারিখে নারায়ণগঞ্জের ইতিহাসে স্মরণকালের একটি বড় জনসভা করব। কিন্তু যেহেতু ৮ তারিখে একটি রায় হবে, এবং ২০১৪ সালে দেশে যারা জ্বালাও পোড়াও করেছে, মানুষকে আগুনে পুড়িয়ে মেরেছে, তাদের আবারো আস্ফালন আমরা দেখতে পাচ্ছি। এই সুযোগে স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি জামায়াত বিএনপির ওপর ভর করে, দেশে যে অরাজকতা চালানোর চেষ্টা করছে, তাঁর পরিপ্রেক্ষিতে আমি চেয়েছিলাম যে নারায়ণগঞ্জের মানুষকে আগে থেকে সচেতন করে, যেহেতু নারায়ণগঞ্জ একটা সচেতন এলাকা, সেই সচেতন এলাকাকে পলিটিক্যালি কনশাস করে, এই সমস্ত অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে তাদেরকে, আহ্বান জানানো। আহ্বান জানিয়ে যেই নারায়ণগঞ্জ ১৯৫২ থেকে আরম্ভ করে এই পর্যন্ত প্রত্যেকটা জায়গায় অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছে। সেই ভূমিকা নেওয়ার জন্য, এবং সারা দেশকে উজ্জীবিত করার জন্য আমরা প্রথমেই এই সমাবেশটা করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আমাদের জেলা আওয়ামী লীগ, মহানগর আওয়ামী লীগের সাথে আমরা এখনো এই ব্যাপারে মতামত ফাইনাল করতে পারি নাই বিধায় এই মিটিংটা স্থগিত করা হলো।’
৮ ফেব্রুয়ারির রায়কে কেন্দ্র করে বিএনপি অশান্তি সৃষ্টি করার চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ করেন শামীম ওসমান।
শামীম ওসমান বলেন, ‘কৌশলগত কারণে, ৮ তারিখে এই রায়ের ওপর ভিত্তি করে তাঁরা দেশে যেই অশান্তি সৃষ্টি করার চেষ্টা করছেন, আদালতের রায়কে অবমাননা করার জন্য, এবং আদালতকে নিয়ে যে ধরনের কথাবার্তা বলছেন, একটা সভ্য দেশে এইভাবে আদালতকে অবমাননা করলে, আমার মনে হয় যে, সুপ্রিম কোর্টে আমাদের ল’ইয়ার আছেন, আমাদের সংসদ সদস্য বাবলী আছেন, এতক্ষণে তাদের ডাকা উচিত ছিলো। যাই হোক আদালতের রায়কে আমরা সম্মান করি। সেই পরিপ্রেক্ষিতে আদালত কী রায় দেয় সেজন্য আমরা অপেক্ষা করবো।’
স্থগিত করলেও ৮ ফেব্রুয়ারির পর সুবিধামতো সময়ে তিনি এই জনসভা ডাকবেন বলে জানান শামীম ওসমান। রায়ের পরেই পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে জানান তিনি।
শামীম ওসমান বলেন, ‘৮ তারিখের পরে আমরা সুবিধামতো সময়ে এই জনসভা করবো। আশা করি ইনশাল্লাহ আমরা ওই জনসভাতে সম্মিলিতভাবে আমরা এই জনসভা করবো। শুধু আওয়ামী লীগ না, স্বাধীনতার পক্ষের অন্যান্য যে সমস্ত রাজনৈতিক সংগঠন আছেন, ব্যক্তিবর্গ আছেন, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ আছেন, সকলকে নিয়ে আমরা স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি আমরা কেন্দ্রের সাথে আলোচনা করে, আমাদের কমিশন গঠন করবো। সেই প্রেক্ষিতে আগামী ৩ তারিখ যেই জনসভাটা আছে, সেই জনসভাটি আমরা আপাতত স্থগিত করছি। কারণ এই জনসভাটাতে আমরা যেই বিষয়টাকে তুলে ধরতে চাচ্ছি। সেই বিষয়টা যেহেতু ৮ তারিখের আগেই আমাদের পরিপূর্ণ বক্তব্য দেওয়া সম্ভব নয়, সেই কারণে আমরা ৮ তারিখের পরে আমাদের নেক্সট কর্মসূচি নারায়ণগঞ্জের ঘোষণা করব।’
সংসদ সদস্য শামীম ওসমান বলেন, ‘আপনাদের সাংবাদিকদের মাধ্যমে আমরা একটি নিয়ম করব যে আমরা এই দেশে শান্তি চাই। আমরা চাই দেশে গণতন্ত্রের বিকাশ ঘটুক। জ্বালাও-পোড়াও, মানুষ পুড়িয়ে মারা, কোনো গণতান্ত্রিক সংগ্রাম হতে পারে না। কেউ যদি তাদের গণতান্ত্রিক সংগ্রাম করতে চান, তাঁরা করতে পারেন, কিন্তু জ্বালাও-পোড়াও, মানুষের সম্পদ ধ্বংস কেউ যদি করতে চায়, নারায়ণগঞ্জের আওয়ামী লীগ জনগণকে নিয়েই তাদের রুখে দাঁড়াবে। এই ব্যাপারটা আমরা পরিষ্কারভাবে জানাতে চাই।’