বড় ভাইয়ের ইয়াবা ঢাকা কলেজে সহপাঠীদের ‘সাপ্লাই’ দেন ছোট ভাই
মরণনেশা ইয়াবা ব্যবসার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে রাজধানীর হাজারীবাগ থানার একটি বাসা থেকে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দাবি, মো. আলম নামের ওই ব্যক্তি মূলত নতুন-পুরাতন গাড়ি ব্যবসার আড়ালে ইয়াবা ব্যবসা করতেন। তাঁকে ‘ইয়াবা-সম্রাট’ বলেও অ্যাখ্যায়িত করেছে র্যাব।
গতকাল বুধবার বিকেলে হাজারীবাগ থানার পশ্চিম ধানমণ্ডির মধুরবাজার এলাকার একটি বাসা থেকে আলমকে (৪০) গ্রেপ্তার করা হলে আজ বৃহস্পতিবার র্যাব-২ এ বিষয় নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে। গ্রেপ্তারের সময় তাঁর কাছ থেকে এক লাখ ২৩ হাজার ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। সঙ্গে গ্রেপ্তার করা হয় আলমের তিন সহযোগীকে।
তাঁরা হলেন মো. জসিম উদ্দিন (২৩), মো. সালাউদ্দিন (২৭) ও মো. মিজানুর রহমান (৩৩)। তাঁদের সবার বাড়ি কক্সবাজার জেলায়। জসিম উদ্দিন ও আলম আপন ভাই। জসিম ঢাকা কলেজের ছাত্র।
দুপুরে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ নিয়ে ব্রিফ করেন র্যাব-২-এর পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আনোয়ার উজ জামান।
আলমকে জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে লেফটেন্যান্ট কর্নেল আনোয়ার উজ জামান জানান, আলম তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত পড়েছে। প্রথমে চিংড়ি চাষ, কটেজ ব্যবসা ও জমিজমা ক্রয়-বিক্রয়সহ বিভিন্ন ব্যবসা-বাণিজ্য করে দ্রুতই বেশ টাকার মালিক হয়ে যান তিনি। এ সময় তিনি নিজে ইয়াবা নেশায় আসক্ত হয়ে পড়েন। পরে নিজে ইয়াবা ব্যবসায় নামেন।
‘আলম নতুন-পুরাতন গাড়ি ক্রয়-বিক্রয়ের ব্যবসার আড়ালে ইয়াবা ব্যবসা শুরু করেন। ভদ্রবেশে তিনি কক্সবাজারের টেকনাফ থেকে প্রতি চালানে লাখ লাখ ইয়াবা ঢাকাতে আনতেন এবং বিক্রি করতেন। তাঁর নিজের ভাড়া করা ফ্ল্যাটেও ইয়াবা সেবনের ব্যবস্থা ছিল।’
আলমের সহযোগীদের পরিচয় দিতে গিয়ে র্যাব কর্মকর্তা জানান, জসিম ঢাকা কলেজে লেখাপড়ার পাশাপাশি বন্ধুদের কাছে ইয়াবা সরবরাহ করত। মো. সালাউদ্দিন মোটরগাড়ির গ্যারেজে মিস্ত্রি হিসেবে কাজ করতেন। পরে আলমের সঙ্গে ইয়াবা ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েন। আর মিজারুর আগে উখিয়া-কক্সবাজার রুটের বাসচালক ছিলেন। প্রলোভনে পড়ে ইয়াবা ব্যবসায় যুক্ত হন এবং ইয়াবা পরিবহনের কাজ করতেন।
এক প্রশ্নের জবাবে র্যাব কর্মকর্তা এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘এই চালানে ইয়াবা ধরেছি প্রায় চার কোটি টাকার। আজ আমরা তাঁকে ধানমণ্ডি থানায় সোপর্দ করব। তারা আদালতে পাঠিয়ে দেবে। তো যে ব্যক্তির চার কোটি টাকার ইয়াবা ধরা পড়ে, সে কি আর ৫০ লাখ টাকা দিয়ে বের হয়ে আসতে পারবে না? পারবে। এবং এই টাকা উসুল করে নেওয়ার জন্য যথারীতি সে আবার এই ইয়াবা ব্যবসা শুরু করবে। তাহলে বন্ধ হবে কী করে?’
গ্রেপ্তারের সময় ঘটনাস্থল থেকে ৮১ হাজার টাকা, সাতটি মোবাইল, একটি ট্রলি ব্যাগ, ক্যালকুলেটর ও ভিজিটিং কার্ড উদ্ধার করা হয়।