কারাগারকে সংশোধনাগার হিসেবে গড়ে তোলা হবে : প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কারাগারকে সংশোধনাগার হিসেবে গড়ে তোলা হবে। তিনি বলেন, কারাগার থেকে মুক্তির পর কারাবন্দিরা যাতে সংশোধিত মানুষ হিসেবে সমাজের মূল¯স্রোতে মিশে দেশের উন্নয়নে অবদান রাখতে পারে সরকারের সে প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।
আজ মঙ্গলবার (২০ মার্চ) শুরু হওয়া কারা সপ্তাহ-২০১৮ উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘কারাবন্দিদের সঙ্গে পরিবারের সদস্যদের যোগাযোগ সহজ হলে তাদের মানসিক অবস্থার উন্নতি হবে। এজন্য সরকার কারাবন্দিদের মোবাইল ফোনে কথা বলার সুযোগ সৃষ্টি করেছে।’ তিনি বলেন, প্রথম পর্যায়ে টাঙ্গাইল জেলা কারাগারে পরীক্ষামূলকভাবে ‘মোবাইল ফোন বুথ’ চালু করা হয়েছে। এর মাধ্যমে কারাবন্দিরা মাসে দু’বার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলতে পারবে। এসব পদক্ষেপে কারাবন্দিরা সুপথে ফিরে আসার সুযোগ পাবে।’
শেখ হাসিনা বলেন, অপরাধমুক্ত সমাজ গঠনে ‘বাংলাদেশ জেল’-এর ভূমিকা অনস্বীকার্য। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার পর চারটি কেন্দ্রীয় কারাগার, ১৩টি জেলা কারাগার এবং ৪২টি উপকারাগার নিয়ে ‘বাংলাদেশ জেল’-এর অগ্রযাত্রার সূচনা করেন।
বাণীতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে আওয়ামী লীগ সরকার ১৯৯৭ সালে দেশের সব উপকারাগারকে জেলা কারাগার হিসেবে ঘোষণা করে। আমরা ২০০৯ সালে সরকার পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে কারাগারকে সংশোধনাগার হিসেবে গড়ে তুলতে বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি।’
সরকারপ্রধান বলেন, বন্দির হাতকে দক্ষকর্মীর হাতে রূপান্তরের লক্ষ্যে বন্দিদের বিভিন্ন ট্রেডে প্রশিক্ষণ দেওয়া করা হচ্ছে। কারাগারগুলো কুটিরশিল্প ও বেকারি স্থাপন করা হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, কারাশিল্পে উৎপাদিত পণ্যসামগ্রীর বিক্রয়লব্ধ অর্থের লভ্যাংশের ৫০ শতাংশ বন্দিদের প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে, যাতে কারাভোগ শেষে পুনরায় অপরাধমূলক কর্মকান্ডে না জড়িয়ে বন্দিরা প্রশিক্ষণ ও মূলধন নিয়ে নতুন কর্মজীবন শুরু করতে পারে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারকে কেরাণীগঞ্জে স্থানান্তর করে আরো আধুনিক সুযোগ সুবিধা সম্বলিত করে গড়ে তোলা হয়েছে। এ কারাগারে বন্দিদের উন্নত চিকিৎসার জন্য ২৫০ শয্যার একটি হাসপাতাল নির্মাণ প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, বন্দিদের নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উন্নত প্রশিক্ষণ প্রদানের লক্ষ্যে একটি প্রশিক্ষণ একাডেমি নির্মাণ প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এ ছাড়া মহিলা কারারক্ষীদের জন্য উন্নত আবাসনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
বাণীতে প্রধানমন্ত্রী কারা সপ্তাহ-২০১৮ উপলক্ষে বাংলাদেশ জেলের সব সদস্যসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানান এবং দিবসটির সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।