মোশতাকের চারপাশে ছিল আ. লীগের বহুজনের ভিড়
বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর জাতীয় চার নেতাসহ আওয়ামী লীগের হাতেগোনা কয়েকজন ত্যাগী নেতা ছাড়া বহুজনই খন্দকার মোশতাকের চারপাশে ভিড় করেছিলেন বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী ও জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু। আজ বুধবার সচিবালয়ে নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে এ মন্তব্য করেন তিনি।urgentPhoto
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) ১৯৭২ সালে একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে এবং ৭৩ সালে প্রথম জাতীয় সংসদের নির্বাচনে একটি আইনানুগ দল হিসেবে অংশগ্রহণ করে। সেই নির্বাচনে বিরোধী দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। ১৯৭২ থেকে ৭৫ অর্থাৎ ৭৫-এর ১৫ আগস্ট পর্যন্ত জাসদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড, কীভাবে চলেছে, কী বিষয় নিয়ে জাসদ বলত এগুলো পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। এই ব্যাপারটি নিয়ে আমি কোনো কথা বলতে যাচ্ছি না। কারণ এটা প্রকাশিত ব্যাপার।’
মন্ত্রী বলেন, ‘প্রথমেই যেটা বলতে চাচ্ছি যে, সাম্প্রতিককালে আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির কতিপয় নেতা হঠাৎ করেই জাসদের বিরুদ্ধে বিষোদগার অথবা সমালোচনা শুরু করেছেন। আমি বিএনপির নেতৃবৃন্দ এবং আওয়ামী লীগের কতিপয় নেতৃবৃন্দ যাঁরা একই সুরে জাসদের বিরুদ্ধে কথা বলা শুরু করেছেন, তাদের সঙ্গে কোনো বাকযুদ্ধে লিপ্ত হতে চাচ্ছি না। বাকযুদ্ধ করার কোনো ইচ্ছাও আমার নেই।’
জাসদ সভাপতি আরো বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু হত্যার পর মোশতাক সাহেবের ক্ষমতা দখলের ৪৮ ঘণ্টার ভেতর জাসদ একটি প্রচারপত্র বিলি করে, সেই সময় আমরা খুনি মোশতাক সরকারের বিরোধিতা করেছিলাম। এই বিরোধিতার ফলে খন্দকার মোশতাকের ৮৩ দিন শাসনকালে জাসদের অসংখ্য নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, ৭০-এর অধিক নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছে। এটা কিন্তু রেকর্ডভুক্ত।’
হাসানুল হক ইনু বলেন, ‘আরেকটা হচ্ছে খন্দকার মোশতাকের ক্ষমতা দখলের পরে জাসদের কোনো নেতা এবং জাসদ দলগতভাবে খন্দকার মোশতাকের সঙ্গে হাত মেলায়নি। তবে কারা খন্দকার মোশতাকের সঙ্গে হাত মিলিয়েছিল? কারা খন্দকার মোশতাকের মন্ত্রিসভায় যোগ দিয়েছিল? সেটা আপনারা জানেন, দেশবাসী জানে। আওয়ামী লীগের জাতীয় চার নেতাসহ হাতে গোনা কয়েকজন ত্যাগী ছাড়া বহুজনই সেদিন খন্দকার মোশতাকের করুণাভিক্ষার জন্য এবং হালুয়া রুটির ভাগাভাগির জন্য তার চারপাশে ভিড় করেছিল। সেই সময় ৮৩ দিন জাসদ পালিয়ে বেড়িয়েছে, আর না হলে কারাগারে নিক্ষিপ্ত হয়েছে, না হলে হত্যাকাণ্ডের সম্মুখীন হয়েছে। এই ছিল জাসদের অবস্থা। সুতরাং খন্দকার মোশতাকের ক্ষমতা দখলের পর জাসদ কিন্তু সুফলভোগী নয়। জাসদ ৮৩ দিনে কোনো সুফলভোগী ছিল না। এ রকম পরিস্থিতিতে আমি বলব যে, যাঁরাই এ কথাটা বলছেন তাঁরা হয় ইতিহাস জানেন না অথবা সচেতনভাবে অন্য কোনো ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হচ্ছেন।’