পরবর্তী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ বাদে অন্য কেউ ক্ষমতায় এলে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা ধরে রাখা সম্ভব হবে না বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদের চলতি অধিবেশনের শেষ দিনে দেওয়া বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, উন্নয়নশীল দেশ হওয়ায় আগের মতো শর্তের বেড়াজালে ঋণ নিতে হবে না।

জাতিসংঘ কর্তৃক স্বল্পন্নোত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পাওয়ায়  সংসদের চলতি অধিবেশনের শেষ দিনে প্রধানমন্ত্রী এবং দেশের জনগণকে ধন্যবাদ জানিয়ে ধন্যবাদ প্রস্তাব গৃহীত হয়। কিন্তু এমন মর্যাদা ধরে রাখার ব্যাপারে দেশের মানুষকে সচেতন থাকতে হবে বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে, আমরা শর্তগুলো পূরণ এমন পর্যায়ে করেছি যদি আমরাও না আসি, কেউ যদি আসে তারা এটাকে ধ্বংস করতে না চায় বা এই উন্নয়নের ধারাটাকে অব্যাহত রাখতে পারে তাহলে কিন্তু আমাদের আর কেউ পিছু হটাতে পারবে না। তবে এখানে আমাদের সন্দেহ আছে। সন্দেহ হচ্ছে এই কারণে যে ৯৬ থেকে ২০০১ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকতে যে উন্নয়নগুলো আমরা করেছিলাম ২০০১ সালে যখন বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় আসে সেগুলো একে একে তারা ধ্বংস করে দিয়েছিল। তাহলে এই দেশে এই উন্নয়নের অগ্রযাত্রা তারা ধরে রাখতে পারবে কি না আমার সন্দেহ আছে। পারবে না। একমাত্র আওয়ামী লীগ পারবে।’

স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে পদার্পণ করায় আগের অনেক সুযোগ-সুবিধা পাওয়া যাবে না বলে যেসব আশঙ্কার কথা বলা হয়, সে ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার ক্ষমতা এখন বাংলাদেশ রাখে।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে হয়তো ঋণ বেশি পেতাম স্বল্প সুদে। কিন্তু অনেক শর্ত পূরণ করতে হতো। অনেক শর্তের মুখোমুখি হতে হতো। যখনই আমরা উন্নয়নশীল দেশ হয়ে গেলাম এখন কিন্তু আমাদের ঋণ প্রাপ্তির আরো সুযোগ হবে। শর্ত এখন আর কেউ বেশি দিতে সাহস পাবে না। শর্তের বেড়াজালে পড়তে হবে না। আমাদের সেই লিবার্টিটা, সেই সুযোগটা এসে যাচ্ছে। কারণ এখন একটা মর্যাদা আমরা অর্জন করেছি। আগের মতো কারো কাছে ভিক্ষা চাইতে হবে না। জাতির পিতা বলেছিলেন, সেই ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণে, যে সাত কোটি মানুষকে দাবায়ে রাখতে পারবা না। এখন আমরা সেখানে ১৬ কোটি মানুষ। ১৬ কোটি মানুষকেও যে দাবায়ে রাখা যায় না- এটা আজকে প্রমাণিত হয়েছে। অনেক ষড়যন্ত্র, অনেক চক্রান্ত অনেক কিছু উপেক্ষা করে অনেক বন্ধুর পথ অতিক্রম করেই আজকে আমরা এই অর্জন করতে সক্ষম হয়েছি।’ 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘অবশ্যই আমরা সুশাসন প্রতিষ্ঠা করেছি। আমরা কাজ করি অন্তর দিয়ে। মানুষকে ভালোবাসি। আমার ধন্যবাদের বেশি প্রয়োজন নাই। সরকার যখন গঠন করতে পেরেছি, আমি একটা কাজ করার সুযোগ পেয়েছি। আমরা ধন্যবাদ জানাই জনগণকে আমাদের ভোট দেওয়ার জন্য, সরকার গঠন করতে সুযোগ দেওয়ার জন্য।’

চলতি অধিবেশনের শেষদিনে বিরোধী দলের নেতা রওশন এরশাদসহ সরকার ও বিরোধী দলের বেশ কয়েকজন সংসদ সদস্য বক্তব্য দেন।