কুড়িয়ে পাওয়া লাখ টাকা ফেরত দিলেন রিকশাচালক
গাজীপুরের শ্রীপুরে এক রিকশাচালক কুড়িয়ে পাওয়া লাখ টাকা পুলিশের মাধ্যমে প্রকৃত মালিককে ফিরিয়ে দিয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে তিনি ওই টাকা ফিরিয়ে দেন। রিকশাচালকের সততায় মুগ্ধ হয়ে তাঁকে ১৫ হাজার টাকা পুরস্কার দেওয়া হয়।
শ্রীপুর থানার পরিদর্শক (অপারেশন) হেলাল উদ্দিন জানান, গাজীপুরের শ্রীপুর পৌর এলাকার কেওয়া গ্রামের আবদুল গফুরের বাড়িতে স্ত্রী-সন্তান ও বৃদ্ধ বাবা-মা নিয়ে ভাড়া থাকেন ফিরোজ মিয়া (৩৭)। তিনি কেওয়া-মাওনা সড়কে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। গ্রামের বাড়ি নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলার মাইপুকুরিয়া গ্রামে। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে যাত্রীর উদ্দেশে অটোরিকশা নিয়ে মাওনা চৌরাস্তার দিকে যাচ্ছিলেন। পথে মাওনা চৌরাস্তা সংলগ্ন সড়কের ওপর রাবার দিয়ে পেঁচানো অনেকগুলো টাকার একটি বান্ডেল দেখতে পান। আশেপাশে কাউকে দেখতে না পেয়ে ওই টাকা কুড়িয়ে নেন। বান্ডেলে ৯৯টি এক হাজার ও দুইটি ৫০০ টাকার নোটসহ মোট এক লাখ টাকা ছিল। পরে তিনি প্রকৃত মালিককে ফেরত দেওয়ার উদ্দেশ্যে পাশের মায়ের দোয়া টাইলস নামের এক দোকানের মালিক মজিবুর রহমানের কাছে টাকাগুলো জমা রাখেন। কিন্তু সন্ধ্যা পর্যন্ত মালিকের সন্ধান না পাওয়ায় টাকাগুলো নিয়ে শ্রীপুর মডেল থানায় জমা দেন তাঁরা।
এদিকে শ্রীপুরের বৈরাগীরচালা গ্রামের আবদুল মান্নান শিকদার ব্যাংকের মাসিক কিস্তি পরিশোধ করার জন্য এক লাখ টাকা দিয়ে তাঁর ভাতিজাকে পাঠান। বৃহস্পতিবার সকালে ওই ভাতিজা মোটরসাইকেল নিয়ে মাওনা চৌরাস্তা এলাকার এক্সিম ব্যাংকে রওনা হন। পথে তাঁর পকেট থেকে ওই টাকার বান্ডেল পড়ে যায়। টাকার সন্ধান না পেয়ে মান্নান শিকদার শ্রীপুর থানায় যোগাযোগ করেন। পুলিশ মান্নান শিকদারকে থানায় ডেকে নেন। পরে যাচাই-বাছাই করে মান্নান শিকদারকে কুড়িয়ে পাওয়া টাকার প্রকৃত মালিক হিসেবে চিহ্নিত করে টাকাগুলো তাঁর হাতে তুলে দেয়।
এ সময় মান্নান শিকদার রিকশাচালক ফিরোজ মিয়ার সততায় মুগ্ধ হয়ে তাঁকে ১৫ হাজার টাকা দিয়ে পুরস্কৃত করেন।
লিয়াকৈর সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার শাহিদুল হক বলেন, ‘সততার মানদণ্ড যে ধনী গরিবের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয় তার প্রমাণ এই রিকশাচালক ফিরোজ মিয়া। নিজে অভাবের মধ্যে থেকেও সততা ও আদর্শের প্রতি তিনি অবিচল ছিলেন। তিনি সত্যিই আমাদের আদর্শ।’