বিএনপি নেতা মোশাররফের জামিন স্থগিত
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অর্থ পাচার মামলায় বিএনপি নেতা ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন দুই সপ্তাহের জন্য স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগ। আজ বৃহস্পতিবার সকালে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেত্বত্বে চার সদস্যর বেঞ্চ এ আদেশ দেন। বেঞ্চের অপর সদস্যরা হলেন বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।
আদালতে মোশাররফ হোসেনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরী ও ব্যারিস্টার মাহবুবউদ্দিন খোকন। রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম এবং দুদকের পক্ষে শুনানি করেন খুরশীদ আলম খান।
এর আগে ১৯ আগস্ট তিনটি শর্তে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্যকে জামিন দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। শর্তগুলো ছিল, তাঁর পাসপোর্ট আদালতে জমা দিতে হবে, তিনি বিদেশে যেতে হলে আদালতের অনুমতি নিয়ে যেতে হবে। এ ছাড়া লন্ডনের ব্যাংকে পাচার করা টাকা স্থানান্তর করা যাবে না। বিচারপতি মো. রুহুল কুদ্দুস ও বিচারপতি ভীষ্মদেব চক্রবর্তীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
এ বিষয়ে অ্যাডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরী এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘অর্থ পাচারের মামলায় খন্দকার মোশাররফ হোসেন প্রায় দেড় বছর কারাগারে বন্দি রয়েছেন। তিনটি শর্তে হাইকোর্ট জামিন দিয়েছিলেন। আজ দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে জামিন দুই সপ্তাহের জন্য স্থগিত করা হয়। বর্তমানে তিনি কাশিমপুর কারাগারে রয়েছেন।’
দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘খন্দকার মোশাররফকে তিনটি শর্ত সাপেক্ষে জামিন দেওয়া হয়েছিল। তবে আজ দুই সপ্তাহের জন্য জামিন স্থগিত করা হয়।’
মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, যুক্তরাজ্যে মোট নয় কোটি ৫৩ লাখ ৯৫ হাজার ৩৮১ টাকা পাচারের অভিযোগে ২০১৪ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি দুদকের পরিচালক নাসিম আনোয়ার বাদী হয়ে রাজধানীর রমনা মডেল থানায় এ মামলা করেন। মামলায় একই বছরের ১২ মার্চ রাত সাড়ে ১০টায় খন্দকার মোশাররফকে গুলশানের নিজ বাসা থেকে আটক করে পুলিশ।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, খন্দকার মোশাররফ ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত দুর্নীতি ও মানি লন্ডারিংয়ের মাধ্যমে যুক্তরাজ্যের একটি ব্যাংকে তাঁর নিজের ও স্ত্রী বিলকিস আক্তারের যৌথ নামে আট লাখ চার হাজার ১৪২ ব্রিটিশ পাউন্ড পাচার করেছেন, যা বাংলাদেশি টাকায় নয় কোটি ৫৩ লাখ ৯৫ হাজার ৩৮১ টাকা। এ টাকা তিনি বিভিন্ন সময় ১০৮৪৯২ নম্বরে জমা করেন। দুদকের অনুসন্ধানে মুদ্রা নিয়ন্ত্রণ আইন লঙ্ঘিত হওয়ায় মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০০২-এর ১৩ ধারা এবং ২০০৯ ও ২০১২-এর ৪ ধারায় মামলা করা হয়।