অপহরণের ৩২ দিন পর মুক্ত মন্টি ও দয়াসোনা চাকমা
রাঙামাটির কুতুকছড়ি থেকে অপহরণের ৩২ দিন পর মন্টি চাকমা ও দয়াসোনা চাকমাকে মুক্তি দিয়েছে অপহরণকারীরা। দুইজনই ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের (ইউপিডিএফ) সহযোগী সংগঠন হিল উইমেনস ফেডারেশনের নেত্রী।
দুই নেত্রীর মুক্তি পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ইউপিডিএফ নেতা মাইকেল চাকমা ও অপহৃত মন্টি চাকমার বড় ভাই সুভাষ চাকমা।
মাইকেল চাকমা জানিয়েছেন, আজ বৃহস্পতিবার রাত পৌনে আটটায় খাগড়াছড়ি শহরের এপিবিএন স্কুল গেট থেকে মন্টি ও দয়াসোনাকে মুক্তি দেওয়া হয়। দুই নেত্রীকে তাঁদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। ছাড়া পাওয়ার পর তাঁরা অভিভাবকদের সঙ্গে খাগড়াছড়ি থেকে বাড়ির পথে রওনা দিয়েছেন। এ ঘটনাটি ন্যাক্কারজনক বলেও মন্তব্য করেছেন এই ইউপিডিএফ নেতা।
মন্টি চাকমা হিল উইমেনস ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক এবং দয়াসোনা কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য।
ইউপিডিএফের প্রচার ও প্রকাশনা বিভাগের দায়িত্ব প্রাপ্ত নেতা নিরন চাকমাও বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। নিরন চাকমা জানান, দুই নেত্রীকে রাত আটটার দিকে পরিবার ও জনপ্রতিনিধিদের কাছে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। এই বিষয়ে এখন আর কিছু বলতে চাই না।
মন্টি চাকমার বড় ভাই সুভাষ চাকমা বলেন, ‘তাদের দুইজনকে বাবা-মা ও জনপ্রতিনিধিদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে এটি নিশ্চিত। তবে বাড়ি না পৌঁছা পর্যন্ত এই বিষয়ে কথা বলতে চাচ্ছি না। বিস্তারিত সকালে জানাব।’
রাঙামাটির পুলিশ সুপার আলমগীর কবীরের বিষয়টি চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা আপনাদের মাধ্যমেই খবর পেলাম। এ বিষয়ে খোঁজ খবর নিচ্ছি।’
গত ১৮ মার্চ রাঙামাটি জেলা শহরের নিকটবর্তী কুতুকছড়ি এলাকা থেকে অপহৃত হয়েছিলেন ইউপিডিএফের এর সহযোগী সংগঠন হিল উইমেনস ফেডারেশনের দুই নেত্রী মন্টি চাকমা ও দয়াসোনা চাকমা। ওই ঘটনার পর সংগঠনটির জেলা সংগঠক সচল চাকমা ই মেইলে পাঠানো এক বিবৃতিতে বিষয়টি প্রথম গণমাধ্যমকে জানান।
ইউপিডিএফ এর পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, ‘১৮ মার্চ সকাল সোয়া নয়টার দিকে সন্ত্রাসীরা খাগড়াছড়ি-রাঙামাটি সড়ক থেকে কয়েক শত গজ দূরে গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের নেতা ধর্ম সিং চাকমাদের বাড়ি লক্ষ্য করে গুলি চালায়। এতে তিনি গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন। দুর্বৃত্তরা ছাত্রদের একটি মেসে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং জঙ্গি গোষ্ঠী বোকো হারামের স্টাইলে হিল উইমেনস ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মন্টি চাকমা ও কেন্দ্রীয় সদস্য দয়াসোনা চাকমাকে অস্ত্রের মুখে অপহরণ করে আবাসিকের বৌদ্ধ মন্দিরের পাশ দিয়ে খাগড়াছড়ি-রাঙামাটি সড়কের পূর্ব পাশের জঙ্গলে নিয়ে যায়।’
ইউপিডিএফ এই ঘটনার জন্য সংগঠন থেকে বেরিয়ে গিয়ে পৃথক সংগঠন হিসেবে আত্মপ্রকাশ করা ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক) কে দায়ী করলেও তবে ইউপিডিএফ (গনতান্ত্রিক) বরাবরই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছিল।