ঈদে লঞ্চে উঠতে হবে আগাম টিকেট নিয়ে
ঈদে ওভারলোডিং ঠেকাতে যাত্রীদের আগে টিকেট কেটে লঞ্চে তোলা বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে। এ জন্য ১৫ সেপ্টেম্বরই যাত্রীদের কাউন্টার থেকে আগাম টিকেট নিয়ে লঞ্চে উঠতে হবে। লঞ্চে ওঠার আগেই যাত্রীদের কাউন্টার থেকে টিকেট সংগ্রহ করতে হবে। প্রথম অবস্থায় কাউন্টার থেকে টিকেট নেওয়ার পাশাপাশি লঞ্চ থেকেও টিকেট নেওয়া যাবে। ঈদের পর থেকে লঞ্চে ওঠার আগে শুধু কাউন্টার থেকে টিকেট নিতে হবে।
মঙ্গলবার বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) ভবনে অনুষ্ঠিত ঈদ-প্রস্তুতি সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভায় সিদ্ধান্ত হয়, ঈদের আগে ও পরে তিন দিন করে মোট সাত দিন নিত্যপণ্য ছাড়া মালবাহী ট্রাক ফেরিতে পারাপার বন্ধ থাকবে। এদিকে, তিন ফেরি রুটে ডিজিটাল টিকেট চালু করতে জাইকার সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছে বিআইডব্লিউটিসি।
নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান আজ বিআইডব্লিউটিএ ভবনের সভাকক্ষে আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে লঞ্চ, ফেরি সার্ভিস ও বিভিন্ন স্টিমার, লঞ্চসহ অন্যান্য জলযানের নিরাপদ চলাচলবিষয়ক এক সভায় এসব সিদ্ধান্তের কথা জানান।
সভার সিদ্ধান্তের বিষয়ে মন্ত্রী জানান, ঈদের সময় কোনোক্রমেই লঞ্চে যাত্রী ও মালামাল ওভারলোড করা যাবে না। লোড লেভেল ক্রস করার আগেই লঞ্চ ছেড়ে দিতে হবে। সদরঘাট থেকে লঞ্চ ছাড়ার পর পথিমধ্যে লঞ্চ থামিয়ে নৌকা বা অন্য কোনো মাধ্যমে যাত্রী বা মালামাল ওঠানো যাবে না।
নৌপরিবহনমন্ত্রী আরো জানান, ঈদের সময় লঞ্চে নির্ধারিত ভাড়ার অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়া যাবে না। লঞ্চের স্বাভাবিক চলাচল নিশ্চিতকল্পে নৌপথে সব মাছ ধরার জাল পাতা বন্ধ রাখতে হবে। লঞ্চে যাত্রীর ওঠার সময় থেকে লঞ্চের চালক, মাস্টার ও অন্যান্য কর্মচারীর অবস্থান নিশ্চিত করতে হবে।
এ ছাড়া ঈদের সময় সার্বিক অবস্থা মনিটরিংয়ের জন্য নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ে প্রয়োজনীয় সংখ্যক ভিজিলেন্স টিম গঠন করার কথাও জানান তিনি। ফেরিঘাট ও লঞ্চঘাটগুলোয় অতিরিক্ত ভাড়া আদায় ও অতিরিক্ত যাত্রীবোঝাই নিয়ন্ত্রণের জন্য মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করতে হবে।
এ ছাড়া বিআইডব্লিউটিসি সভায় সিদ্ধান্ত হয়, গার্মেন্ট ও নিটওয়্যার সেক্টরে ঈদের ছুটি পুনর্বিন্যাস করার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, এফবিসিসিআই, বিজেএমইএ, বিকেএমইএকে অনুরোধ জানানো হবে। ফেরিঘাটে সিরিয়াল প্রদানের বিষয়ে কোনো ধরনের অনিয়ম করা যাবে না। যাত্রীসেবা নিশ্চিত ও নিরাপত্তার বিষয়ে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।
সভায় জানানো হয়, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) কর্তৃক পরিচালিত আরিচা, শিমুলিয়া, চাঁদপুর, ভোলা, লাহারহাট ও মতলব সেক্টরে ৪৬টি ফেরি সার্ভিসে নিয়োজিত থাকবে।
নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব শফিক আলম মেহেদী, বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান কমডোর এম মোজাম্মেল হক, বিআইডব্লিউটিসির চেয়ারম্যান মো. মিজানুর রহমান, সমুদ্র পরিবহন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কমডোর এম জাকিরুল ইসলাম ভূঁইয়া, নৌপুলিশের মহাপরিচালক, লঞ্চ মালিক, শ্রমিক, সড়ক পরিবহন ফেডারেশন, ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান মালিক সমিতির প্রতিনিধি এবং সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপাররা সভায় উপস্থিত ছিলেন।