ট্রাইব্যুনাল কমিয়ে আনলে প্রতারণা হবে : ইমরান
মুক্তিযুদ্ধের সময় সংগঠিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের জন্য গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সংখ্যা কমিয়ে আনা হলে তা জনগণের সঙ্গে প্রতারণার শামিল হবে বলে মন্তব্য করেছেন গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকার। মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদ ও বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদেরের রায় অবিলম্বে কার্যকরের দাবিতে গণজাগরণ মঞ্চের গণ-অবস্থান ও মিছিল কর্মসূচিতে তিনি এ মন্তব্য করেন।
পূর্বঘোষণা অনুযায়ী মুজাহিদ ও সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর মৃত্যুদণ্ড দ্রুত কার্যকরের দাবিতে প্রতি শুক্রবারের গণ-অবস্থান বিকেল ৪টার কিছু পরে শুরু হয়। এ সময় নানা প্রতিবাদী স্লোগানের মধ্য দিয়ে গণজাগরণ মঞ্চের কর্মী-সমর্থকরা দ্রুত রায় কার্যকরের দাবি জানান। এরপর ইমরান এইচ সরকারের সভাপতিত্বে একটি সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয় বলে মঞ্চের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
গতকাল বৃহস্পতিবার আইনসচিব এ এস এম জহিরুল হক সন্ধ্যায় জানান, দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের মধ্যে একটির কার্যক্রম চলার সময় অন্যটি অকার্যকর থাকে। তাই ট্রাইব্যুনাল-১ সক্রিয় রেখে ট্রাইব্যুনাল-২ নিষ্ক্রিয় করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আইন মন্ত্রণালয়।
আইনসচিব আরো জানান, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল-২ বিলুপ্ত করা হয়নি। ভবিষ্যতে মামলার সংখ্যা বাড়লে ট্রাইব্যুনালকে আবার সচল করা হবে।
এরই মধ্যে একটি সারসংক্ষেপ রাষ্ট্রপতির গোচরে এনেছেন আইনমন্ত্রী। আগামী রোববার প্রজ্ঞাপন জারি করে ট্রাইব্যুনাল-১ পুনর্গঠন এবং এর চেয়ারম্যান ও সদস্যদের নাম ঘোষণার সম্ভাবনা রয়েছে বলেও জানান আইনসচিব।
বিচারপ্রক্রিয়ায় ধীরগতিতে হতাশা প্রকাশ করে ইমরান এইচ সরকার বলেন, ‘যে গতিতে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারকাজ সম্পন্ন হচ্ছে তাতেও সকল যুদ্ধাপরাধীর বিচার সম্পন্ন হতে ১০০ বছর লেগে যাবে। আমরা দীর্ঘদিন ধরে দাবি করে আসছিলাম ট্রাইব্যুনালের সংখ্যা বাড়িয়ে যুদ্ধাপরাধের বিচারে গতিসঞ্চারের জন্য, কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি উল্টো ট্রাইব্যুনাল কমিয়ে দেওয়ার কথা বলা হচ্ছে। আমরা স্পষ্টভাবে বলছি, ট্রাইব্যুনালের সংখ্যা কমিয়ে দেওয়া হবে আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত এবং এটি হবে জনগণের সঙ্গে প্রতারণার শামিল।’
সিলেট গণজাগরণ মঞ্চের কর্মী শাহরিয়ার মজুমদারের মৃত্যুকে ‘রহস্যাবৃত’ অভিহিত করে ইমরান এইচ সরকার বলেন, ‘যুদ্ধাপরাধের বিচারের দাবিতে আন্দোলনে এ পর্যন্ত ২৪ জনের অধিক সহযোদ্ধাকে আমাদের হারাতে হয়েছে, অথচ রায় কার্যকর হয়েছে মাত্র দুজন যুদ্ধাপরাধীর।’
সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন গণজাগরণ মঞ্চের কর্মী সাঈদা সুলতানা এ্যানি, জীবনানন্দ জয়ন্ত, ভাস্কর রাসা প্রমুখ।
সমাবেশ শেষে যুদ্ধাপরাধীদের রায় দ্রুত কার্যকরের দাবিতে গণজাগরণ মঞ্চের মিছিল শাহবাগ থেকে টিএসসি ঘুরে আবার শাহবাগে ফিরে আসে।