ঝিনাইদহে সওজের বিরুদ্ধে মানববন্ধন
ঝিনাইদহে সড়ক মেরামত বাবদ বরাদ্দ করা অর্থ লুটপাটে জড়িত থাকার অভিযোগে সড়ক ও জনপদ (সওজ) বিভাগের কর্মকর্তা, কর্মচারী ও সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে এলাকাবাসী। আজ বুধবার বেলা ১১টার দিকে জেলা শহরের হামদহ-আরাপপুর সড়কের পাগলাকানাই মোড়ের কাছে এ কর্মসূচি পালিত হয়।
এলাকাবাসী অভিযোগ করে, কোটি টাকা ব্যয়ে শহরের গুরুত্বপূর্ণ হামদহ-আরাপপুর সড়কটি এক মাস আগেই সংস্কার করা হয়। তার মাত্র কয়েক দিন পরেই বিভিন্ন জায়গার ইটপাথর উঠে গিয়ে বর্তমানে সড়কটির বেহাল দশা। যেখানে সেখানে বড় বড় গর্ত হওয়ায় জমে থাকছে পানি। যানবাহন চলাচল হয়ে পড়েছে ঝুঁকিপূর্ণ, ফলে প্রতিনিয়ত সড়কটিতে ঘটছে নানা রকম দুর্ঘটনা। এর মধ্যে বেশ কিছু পথচারীও আহত হয়েছে বলে জানান এলাকাবাসী।
প্রতিবাদ সমাবেশে এলাকাবাসী আরো জানায়, সড়কটি সংস্কারে খুবই নিম্নমানের ইট, বালি ও পাথর ব্যবহার করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত সওজের স্থানীয় প্রকৌশলীসহ ঠিকাদারের বিচার দাবি করেছেন তারা।
এ বিষয়ে সওজের ঝিনাইদহের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মো. তানভীর আহম্মেদ জানান, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে জরুরি সংস্কার ও মেরামত খাতের বরাদ্দ থেকে জেলা শহরের মেইন বাসস্ট্যান্ড থেকে আরাপপুর সড়ক এবং হামদহ-আরাপপুর সড়কের এক হাজার ৮০০ মিটার সিলকোটসহ মেরামত করা হয়েছে। এর মধ্যে হামদহ-আরাপপুর সড়কের ৫৩৭ মিটার বর্তমানে ক্ষতিগ্রস্ত। মেরামতের কয়েক দিন পরই সড়কটির বিভিন্ন স্থানে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে বলে স্বীকার করেছেন তিনি। খুলনার ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান মেসার্স শহিদ এন্টারপ্রাইজ এই রাস্তার কাজটি করেছে বলে জানান তানভীর আহম্মেদ।
এদিকে এ সড়ক মেরামত বাবদ নিয়োজিত ঠিকাদারকে এর ভেতরেই প্রায় এক কোটি টাকার বিল দিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট দপ্তরের উপসহকারী প্রকৌশলী নাজমুস সাকিব।
গত অর্থবছরে সড়ক বিভাগ ঝিনাইদহের অধীনে স্থানীয় বিভিন্ন সড়ক মেরামত ও সংস্কার কাজের জন্য প্রায় সাড়ে ছয় কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয় বলে জানা গেছে। অভিযোগ রয়েছে দুর্নীতির মাধ্যমে এ বরাদ্দকৃত টাকার বড় একটি অংশ গত ৩০ জুনের মধ্যে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতি ও কোটেশনের মাধ্যমে তড়িঘড়ি করে খরচ করা হয়।
এ বিষয়ে সওজের ঝিনাইদহের নির্বাহী প্রকৌশলী এস এম মোয়াজ্জেম হোসেন সাংবাদিকের সঙ্গে কথা বলতে অনাগ্রহ দেখান। মোবাইল ফোনে কথা বলার সময় তিনি দুর্নীতির অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, সড়ক বিভাগের উদ্যোগে হামদহ-আরাপপুর সড়কের ক্ষতিগ্রস্ত অংশ পুনরায় ইট, বালি দিয়ে মেরামতের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বর্ষা শেষ হলে আবারও সড়কটি মেরামত করা হবে বলে জানান তিনি।
হামদহ-আরাপপুর সড়কটি দিয়ে প্রতিনিয়ত উত্তরবঙ্গসহ দেশের বিভিন্ন জেলার হাজার হাজার ট্রাক ও বাস চলাচল করে। বেনাপোল ও মোংলা স্থলবন্দর থেকে খালাস করা মালামাল পরিবহনের কাজেও এ বিকল্প সড়কটি গুরুত্বপূর্ণ।