মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় খালাস ৩
মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ থেকে যশোরের তিনজনকে খালাস দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। একই মামলায় সাবেক সংসদ সদস্য মাওলানা সাখাওয়াত হোসেনসহ অপর নয় আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নেওয়া হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার দুপুর পৌনে ১২টায় ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
ট্রাইব্যুনালে আসামিদের পক্ষে অ্যাডভোকেট আবদুস সাত্তার ও রাষ্ট্রপক্ষে প্রসিকিউটর জেয়াদ আল মালুম উপস্থিত ছিলেন।
খালাস পাওয়া তিনজন হলেন আকরাম হোসেন (৫৯), অজিহার মোড়ল ওরফে ওজিয়ার মোড়ল (৬৪) ও মশিয়ার রহমান (৬০)। এর মধ্যে মশিয়ার রহমান পলাতক রয়েছেন।
ট্রাইব্যুনাল থেকে বেরিয়ে আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আবদুস সাত্তার সাংবাদিকদের বলেন, এই তিনজনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের কোনো তথ্য-প্রমাণ না পাওয়ায় ট্রাইব্যুনাল তাঁদের অব্যাহতি দিয়েছেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট জেয়াদ আল মালুম বলেন, ১২ জনের মধ্যে ট্রাইব্যুনাল তিনজনকে অব্যাহতি দিয়েছেন।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে রাষ্ট্রপক্ষের এ আইনজীবী বলেন, ট্রাইব্যুনালের পাঁচ বছরের ইতিহাসে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া এটাই প্রথম ঘটনা।
এদিকে, অপর নয় আসামি সাখাওয়াত হোসেন (৬১), মো. বিল্লাল হোসেন (৭৫), মো. ইব্রাহিম হোসেন (৬০), শেখ মোহাম্মদ মুজিবর রহমান (৬১), মো. আ. আজিজ সরদার (৬৫), আবদুল আজিজ সরদার (৬৬), কাজী ওহিদুল ইসলাম (৬১), মো. লুৎফর মোড়ল (৬৯) ও আবদুল খালেক মোড়লের (৬৮) বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নিয়ে পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর নির্ধারণ করা হয়েছে।
এর আগে গত ১৪ জুন এই ১২ জনের বিরুদ্ধে গণহত্যা, হত্যা, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের পাঁচ অভিযোগ আনে ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। মুক্তিযোদ্ধাসহ ৩২ জন এ মামলার সাক্ষী।
মামলার বিবরণে জানা যায়, সাখাওয়াতসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে ২০০৯ সালে যশোরে মামলা করা হয়। প্রসিকিউশনের আবেদনে গত বছরের ২৬ নভেম্বর সাখাওয়াত হোসেনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন ট্রাইব্যুনাল। পরে ২৯ নভেম্বর রাজধানীর উত্তরখান থেকে সাখাওয়াত হোসেনকে গ্রেপ্তার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
২০১২ সালের ১ এপ্রিল থেকে এ মামলায় তদন্ত শুরু করে গত ১৩ জুন শেষ করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা আবদুর রাজ্জাক খান।
সাখাওয়াত হোসেনের বিরুদ্ধে তদন্ত করতে গিয়ে একই অপরাধে আরো ১১ জনের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেলে এ মামলায় মোট আসামি হন ১২ জন। প্রসিকিউশনের আবেদনে গত ১২ মে বাকি ১১ জনের বিরুদ্ধেও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন ট্রাইব্যুনাল। এর পর ওই দিন রাতেই তিনজনকে গ্রেপ্তার করার পর ১৩ মে হাজির করা হলে তাঁদের কারাগারে পাঠিয়ে দেন ট্রাইব্যুনাল।