দায় মুক্তির বিধান রেখে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বিল পাস
দায় মুক্তির বিধান রেখে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রসহ অন্যান্য পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন ও পরিচালনার জন্য একটি কোম্পানি গঠনের বিধান সংবলিত ‘পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র আইন-২০১৫’ সংসদে পাস হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার রাতে দশম সংসদের সপ্তম অধিবেশনে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান বিলটি পাসের প্রস্তাব করলে কণ্ঠ ভোটে বিলটি পাস হয়।
বিলের ২৮ দফায় বলা হয়েছে, পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ ও পরিচালনার বিষয়ে সরল বিশ্বাসে কোনো কাজকর্মের জন্য সরকার, চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, প্রকল্প পরিচালক, অন্য কোনো পরিচালক, পরামর্শক, উপদেষ্টা, কর্মকর্তা বা কর্মচারীর বিরুদ্ধে কোনো দেওয়ানী বা ফৌজদারি মামলা বা অন্য কোনো আইনগত কার্যক্রম গ্রহণ করা যাবে না।
বিলের ১৯ দফায় বলা হয়েছে, কোম্পানি, (১) সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে বা সরকার কর্তৃক উহাকে প্রদত্ত কোনো সাধারণ কর্তৃত্বের শর্তানুযায়ী (ক) কোম্পানীর সকল বা যে কোনো উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, বাংলাদেশের ভিতরে ঋণ গ্রহণ বা বৈদেশিক মুদ্রা সংগ্রহ করিতে পারিবে; (খ) কোম্পানির মালিকানাধীন কোনো সম্পত্তি দায়বদ্ধকরণ বা বন্ধকের মাধ্যমে দফা (ক) এর অধীন গৃহীত ঋণের কোনো অংশ জামানত রাখিতে পারিবে; (গ) বন্ড, ডিবেঞ্চার এবং ডিবেঞ্চার-স্টক ইস্যুর মাধ্যমে মূলধন সংগ্রহ করিতে পারিবে। (২) সরকার তৎকর্তৃক উপযুক্ত পদ্ধতি এবং শর্তে কোম্পানি কর্তৃক ইস্যুকৃত কোনো বন্ড, ডিবেঞ্চার বা ডিবেঞ্চার-স্টক এবং উহার সুদের পুনঃপরিশোধের জন্য গ্যারান্টি প্রদান করিতে পারিবে।
আইনে সরকারের পুর্বানুমোদনক্রমে ‘নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্ট কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেড’ নামে একটি কোম্পানি গঠনের জন্য বাংলাদেশ এটমিক এনার্জি কমিশনকে ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। এই কোম্পানি রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ অন্যান্য পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের পরিচালন সংস্থা হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে।
বিলের উদ্দেশ্য কারণ সংবলিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সরকার পাবনার ঈশ্বরদীতে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের কাজ শুরু করেছে। এরই মধ্যে এর প্রাথমিক পর্যায়ের সিংহভাগ কাজ সমাপ্ত হয়েছে। শিগগিরই বিদ্যুৎকেন্দ্রের মূল কাজ শুরু হবে। পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র একটি উচ্চ প্রযুক্তিঘন ও বাংলাদেশের জন্য সম্পূর্ণ নতুন প্রকল্প। এর সফল বাস্তবায়নের জন্য বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠানের সব ধরনের সক্ষমতা থাকা আবশ্যক। এ সক্ষমতা অর্জনের লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক বাধ্যবাধকতা অনুযায়ী এ ধরনের প্রকল্পের সব কার্যক্রম আইনসিদ্ধ হওয়া আবশ্যক। সেজন্য আন্তর্জাতিক পারমাণবিক সংস্থার গাইড লাইন এবং বহির্বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সূচর্যা অনুযায়ী বাংলাদেশেও স্বতন্ত্র একটি আইনের অধীনে একটি কোম্পানি গঠনপূর্বক ওই কোম্পানিকে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া আবশ্যক। এই পরিপ্রেক্ষিতেই বিলটি তৈরি করা হয়েছে।