পঞ্চগড়ে বাসের ধাক্কায় বাবা-দুই সন্তানের মৃত্যুতে মামলা
পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলায় বাসের ধাক্কায় বাবা ও দুই ছেলেমেয়ের মৃত্যুতে মামলা করা হয়েছে। তানজিলা পরিবহনের চালককে আসামি করে আজ রোববার মামলাটি করেন বোদা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) নাজমুল হক।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বোদা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) আকতারুল ইসলাম। এ ছাড়া তানজিলা পরিবহনের মালিককে এ বিষয়ে নোটিশ দেওয়া হবে বলেও তিনি জানান।
এদিকে, আজ নিহত আখতারুজ্জামান আকতার ও তাঁর দুই সন্তান আফসা ইবনাত আদিয়া (৬) ও ছেলে আব্দুল্লাহর (১৪ মাস) দাফন সম্পন্ন হয়েছে। সকালে জেলার দেবীগঞ্জ উপজেলার পামুলি ইউনিয়নের কাউনিখুয়া এলাকার পারিবারিক কবরস্থানে জানাজা শেষে তাদের দাফন করা হয়।
দুর্ঘটনায় আহত হন আকতারের স্ত্রী তানিয়া আক্তার। আজ সকালে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে অ্যাম্বুলেন্সে করে গ্রামের বাড়িতে যান শেষবার স্বামী ও সন্তানদের দেখতে। এ সময় তাদের লাশ দেখে তানিয়া অচেতন হয়ে পড়েন। সেখানে হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। পরিবার,আত্মীয়স্বজন ও স্থানীয়দের আহাজারিতে এ সময় পরিবেশ ভারি হয়ে ওঠে।
নিহত আখতারুজ্জামানের গ্রামের বাড়ি জেলার দেবীগঞ্জ উপজেলার পামুলি ইউনিয়নের কাউনিখুয়া গ্রামে। তিনি পঞ্চগড় শহরের পূর্ব জালাসী এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন।
পুলিশ জানায়, আক্তারুজ্জামান, তাঁর স্ত্রী ও দুই সন্তানসহ ঠাকুরগাঁও থেকে ছেলের চিকিৎসা শেষে শনিবার রাতে মোটরসাইকেলে করে পঞ্চগড় শহরের ভাড়া বাড়িতে ফিরছিলেন। ধনীপাড়া এলাকায় পৌঁছালে পঞ্চগড় থেকে ঢাকাগামী তানজিলা পরিবহনের একটি বাস তাঁদের মোটরসাইকেলটিকে ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই আকতারুজ্জামান মারা যান।
এ সময় তাঁর দুই সন্তান ও স্ত্রীকে হাসপাতালে নেওয়ার পথে শিশু দুটি মারা যায়। এদিকে, মা তানিয়া আক্তারকে প্রথমে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ জনগণ কয়েক ঘণ্টা মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে।
পরে তানজিলা পরিবহনের ওই বাসটিকে রংপুরের বড়দরগা এলাকা থেকে আটক করা হয়। কিন্তু ততক্ষণে বাসের চালক ও সংশ্লিষ্টরা পালিয়ে যায়।
পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুদর্শন রায় বলেন, ‘পঞ্চগড়ে নৈশ কোচের ধাক্কায় একই পরিবারের শিশুসহ তিনজন নিহত হয়েছে। এটা খুব দুঃখজনক ঘটনা। আমরা দুর্ঘটনার জন্য তানজিলা এন্টারপ্রাইজের গাড়িটিকে রংপুরের বড়দরগা এলাকা থেকে আটক করেছি। তবে গাড়ির চালককে আটক করা সম্ভব হয়নি। এ ঘটনায় বোদা থানায় একটি মামলা হয়েছে। মামলা অনুযায়ী দুর্ঘটনার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’