ভাইস চেয়ারম্যান না হওয়ায় আমীর-উল ইসলামের পদত্যাগ
বার কাউন্সিলের সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পরও ভাইস চেয়ারম্যান পদ না পাওয়ায় কাউন্সিল থেকে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ব্যারিস্টার এম আমীর-উল ইসলাম। এজন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বরাবর পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন তিনি।
আজ মঙ্গলবার আমীর-উল ইসলামের মেয়ে ব্যারিস্টার তানিয়া আমীর এনটিভি অনলাইনকে এসব কথা জানিয়েছেন।
তানিয়া আমীর জানান, ‘বার কাউন্সিলের সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর কাউন্সিলের অন্য নির্বাচিত সদস্যরা ব্যারিস্টার আমীর-উল ইসলামকেই ভাইস চেয়ারম্যান বানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। কিন্তু গতকাল সোমবার আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের টেলিফোনের পরিপ্রেক্ষিতে কাউন্সিলের সদস্যরা তাঁদের মতামত পরিবর্তন করেন। এরপর তাঁরা বাসেত মজুমদারকে ভাইস চেয়ারম্যান বানানোর সিদ্ধান্ত নেন। নতুন এই সিদ্ধান্তের কথা জানার পর বার কাউন্সিল থেকে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন আমীর-উল ইসলাম।’
আর এজন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে পদত্যাগপত্র পাঠানো হয়েছে বলেও জানান তানিয়া আমীর। প্রধানমন্ত্রী অনুমোদন করলে বার কাউন্সিল থেকে ব্যারিস্টার আমীর-উল ইসলামের পদত্যাগ কার্যকর হয়ে যাবে বলে এনটিভি অনলাইনকে জানান তানিয়া আমীর।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বার কাউন্সিলের নির্বাচিত সদস্য শ ম রেজাউল কবির এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘বার কাউন্সিলের নির্বাচনের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক করি আমরা নব নির্বাচিত সব সদস্যরা। বৈঠকে কাউন্সিলের নতুন ভাইস চেয়ারম্যান কে হবেন সে ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা চাওয়া হয়। জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এবারের নির্বাচনে যিনি সবচেয়ে বেশি ভোট পেয়েছেন তিনিই হবেন বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান।’
সেই হিসাবে এবারের নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি ভোট পেয়ে ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগের বর্ষীয়ান আইনজীবী বাসেত মজুমদার। আজ বিকেল ৪টায় বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সভাকক্ষে নির্বাচিত সদস্যদের ভোটে তিনি এ পদে নির্বাচিত হন।
তবে এ সময় নির্বাচিত সদস্য ব্যারিস্টার আমীর-উল ইসলাম অনুপস্থিত ছিলেন বলে এনটিভি অনলাইনকে জানিয়েছেন বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের তথ্য কর্মকর্তা নাজমুল আহসান। তিনি জানান, সদস্যদের প্রত্যক্ষ ভোটে আব্দুল বাসেত মজুমদার ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন।
এ ব্যাপারে বাসেত মজুমদার বলেন, ‘আমি এবারের নির্বাচনে সর্বোচ্চ ভোট পেয়েছি। নির্বাচিত সদস্যরা তাই আমাকে ভোট দিয়ে ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত করেছেন।’
বার কাউন্সিলের নতুন ভাইস-চেয়ারম্যান নির্বাচনের পর কমিটির অন্যান্য পদ গঠনের প্রক্রিয়া চলছে।
এদিকে গতকাল সোমবার সকাল থেকেই আমীর-উল ইসলাম ভাইস চেয়ারম্যান হতে না পারলে পদত্যাগ করতে পারেন বলে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে।
গত ২৬ আগস্ট বার কাউন্সিলের নির্বাচনে সরকার সমর্থক আইনজীবীদের সংগঠন সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদ এ নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রায়। মোট ১৪টি পদের ১১টিতেই তারা জয় পেয়েছে। বাকি তিনটিতে পেয়েছে বিএনপি-জামায়াত সমর্থক নীল প্যানেল। নিয়ম অনুযায়ী বার কাউন্সিলের সাধারণ আসনের সাত ও গ্রুপ আসনের সাতজন মিলে নির্বাচিত ১৪ জনের মধ্য থেকেই নির্বাচিত হন একজন ভাইস চেয়ারম্যান।
পদাধিকার বলে এ সংস্থার চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন অ্যাটর্নি জেনারেল।
এবারের নির্বাচনে সরকার সমর্থক প্যানেল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ায় তাদের মধ্য থেকেই কেউ একজন ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হবেন বলে নিশ্চিত ছিল। সম্ভাব্য ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে আলোচনায় ছিল ব্যারিস্টার আমীর-উল ইসলাম ও ব্যারিস্টার আব্দুল বাসেত মজুমদারের নাম।