পঞ্চগড়ে বাস-ট্রাক সংঘর্ষে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১০
পঞ্চগড়ে বাস ও ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১০ জনে দাঁড়িয়েছে। আহত হয়েছে ২৫ জন। গতকাল শুক্রবার রাত পৌনে ৮টার দিকে পঞ্চগড়-তেঁতুলিয়া মহাসড়কে পঞ্চগড় সদর উপজেলার সাতমেরা ইউনিয়নের দশমাইল এলাকায় দুর্ঘটনাটি ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, রাতে ঘটনাস্থল দশমাইলে একটি বরযাত্রীবাহী বাস দাঁড়ানো ছিল। পঞ্চগড়গামী বিদ্যুতের খুঁটি বহনকারী ট্রাকটি দাঁড়ানো বাসটিকে পাশ কাটাতে যায়। এ সময় বিপরীত দিক তেঁতুলিয়াগামী যাত্রীবাহী মিনিবাসটির সঙ্গে ট্রাকটির মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়।
এতে ঘটনাস্থলেই পাঁচজন নিহত এবং পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতলে নেওয়ার পর এক শিশু, এক নারীসহ তিনজন মারা যায়। রাতে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান আরো দুজন।
নিহতরা হলেন- পঞ্চগড় জেলার সদর উপজেলার সাতমেরা ইউনিয়নের জোতহাসনা গ্রামের সাইদুল ইসলামের স্ত্রী লাভলী বেগম (২৯), সাইদুল ইসলামের ছেলে ইয়াছিন আলী (৭), বোদা উপজেলার কালিয়াগঞ্জ ইউনিয়নের উৎকুড়া গ্রামের পুতিনের ছেলে অনিত্য (২০), তেঁতুলিয়া উপজেলার বাংলাবান্ধা ইউনিয়নের উত্তর কাসেমপুর গ্রামের আব্দুল খালেকের ছেলে ফরিদুল ইসলাম (৩০), পঞ্চগড় সদর উপজেলার সাতমেরা ইউনিয়নের শিতলীহাসনা গ্রামের আজিজার রহমানের ছেলে রেজাউল (২২), তেঁতুলিয়া উপজেলার তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের গুয়াবাড়ি গ্রামের আব্দুর রশিদের ছেলে রাসেল (২০), তেঁতুলিয়া উপজেলার তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের গরিয়াগছ গ্রামের সফিকুল ইসলামের ছেলে ইউনুস আলী (২৮), তেঁতুলিয়া উপজেলার তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের মোমিনপাড়া গ্রামের আজিজুল ইসলামের ছেলে মোজাম্মেল (৩৮), তেঁতুলিয়া উপজেলার তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের গরিয়াগছ গ্রামের ইউসুফ আলীর ছেলে মনির (৬) এবং ডাঙ্গাপাড়া এলাকার ওমর আলীর মেয়ে রাহেলা (২৫)।
আহতদের মধ্যে এজারুল, আজিজার, বিপুল, শাহীন, রেজাউল, সাদেকুল, রমনীর নাম জানা গেছে। অন্যদের নাম এখনো জানা যায়নি।
পঞ্চগড় ও তেঁতুলিয়ার ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের দুটি ইউনিট, পুলিশসহ স্থানীয় লোকজন হতাহতদের উদ্ধার করে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। গুরুতর আহত কয়েকজনকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। রাত ১১টায় উদ্ধারকাজ শেষ হয়।
পঞ্চগড় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আক্কাস আলী দুর্ঘটনায় ১০ জনের নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ট্রাকটিকে আটক করা হয়েছে। চালক পালিয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) গোলাম আযম বলেন, দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত জেলা হাকিম এহেতেশাম রেজাকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটিকে আগামী তিনদিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দুর্ঘটনায় নিহত প্রত্যেক পরিবারকে নগদ ২০ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছে।