বৃক্ষ ও পরিবেশ রক্ষায় ব্যালটের পরিবর্তে ইভিএম
আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) ব্যবহার প্রসঙ্গে নির্বাচন কমিশনার মো. রফিকুল ইসলাম বলেছেন, বৃক্ষসম্পদ ও পরিবেশ রক্ষায় কাগজের ব্যবহার কমাতে ব্যালটের পরিবর্তে নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই পদ্ধতির কেউ ত্রুটি প্রমাণ করতে পারলে আগামী নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার করা হবে না।
আজ শনিবার দুপুরে রাজশাহী আঞ্চলিক নির্বাচন কমিশন অফিস প্রাঙ্গণে ইভিএম প্রদর্শনী মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন রফিকুল ইসলাম।
সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ইভিএম সম্পর্কে জনগণকে ধারণা দিতে নির্বাচন কমিশন এই মেলার আয়োজন করে। এতে ইভিএমের মাধ্যমে ভোটারদের ডেমো ভোট প্রদানের ব্যবস্থা করে তারা।
রাজশাহীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. আলমগীর কবিরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ভারপ্রাপ্ত বিভাগীয় কমিশনার মো. আমিনুল ইসলাম, মহানগর পুলিশ কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার ও পুলিশের রাজশাহী রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি নিশারুল আরিফ।
অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম বলেন, একটি নির্বাচনে ব্যালটের জন্য সুন্দরবনের সমপরিমাণ বৃক্ষ কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার করতে হয়। আমরা বাংলাদেশ এবং বিশ্বের বৃক্ষসম্পদ রক্ষা, আমাদের বাঁশঝাড় রক্ষা এবং পরিবেশ রক্ষার্থে কাগজের ব্যবহার কমাতে চাই। এ কারণেই নির্বাচনে ব্যালটের পরিবর্তে ইভিএম ব্যবহারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ইভিএম পদ্ধতিতে ভোটারদের বায়োমেট্রিক সংযুক্ত করায় ভোটারের হাতের আঙুলের ছাপ ছাড়া ভোট দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। ফলে এই পদ্ধতিতে ‘আমার ভোট আমি দেব, যাকে খুশি তাকে দেব’ প্রয়োগ করা সম্ভব। এই পদ্ধতিতে ব্যালট পেপার ছিনতাই কিংবা জাল ভোট দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। নির্বাচন কাজে জড়িতদেরও শঙ্কায় থাকতে হয় না। এরপরও কেউ যদি প্রমাণ করতে পারে, ইভিএম পদ্ধতিতে জালিয়াতি করা সম্ভব, তাহলে নির্বাচনে আমরা ইভিএম ব্যবহার করব না। নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের জন্য আমাদের পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতি আছে। এরপরও আমরা সীমিত আকারে ইভিএম ব্যবহারের উদ্যোগ নিয়েছি। কিন্তু এখানে আইনের কিছু বিষয় আছে। নির্বাচন কমিশন আইন তৈরি করতে পারে না। সরকারের মাধ্যমে মহান সংসদ অথবা অর্ডিন্যান্সের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি এই আইন জরি করলেই আমরা একাদশ সংসদ নির্বাচনে সীমিত আকারে ইভিএম ব্যবহার করব।
ইভিএম নিয়ে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর আপত্তি প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে নির্বাচন কমিশনার বলেন, আমাদের নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কিছু দল এতে আপত্তি জানিয়েছে। যারা আপত্তি জানিয়েছে, মজার ব্যবহার হলো সাম্প্রতিক সময়ের স্থানীয় সরকার নির্বাচনে তারা দলীয় প্রতীকে অংশ নিয়ে ইভিএম ব্যবহারেও কোথাও কোথাও জয়ী হয়েছে। তবে রাজনৈতিক দলের আপত্তির চেয়ে ভোটারদের সন্তুষ্টি অর্জনই আমাদের লক্ষ্য। ভোটারার এই পদ্ধতি দেখে যদি সন্তুষ্ট হয়, তাহলে রাজনৈতিক দলগুলোও তা মেনে নেবে বলে আমরা মনে করি।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম বলেন, নির্বাচন কমিশনের কাছে ঐক্যফ্রন্ট বলতে কিছু নেই, ৩৯টি রাজনৈতিক দলই আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ।