শরীয়তপুরে আ.লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ১৫
শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার ডগ্রি বাজারে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে ১৫ ব্যক্তি আহত হয়েছে। গতকাল রোববার সন্ধ্যার পর নশাসন ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন তালুকদারের সমর্থক মাসুম ছৈয়াল ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা লিটন হাওলাদারের মধ্যে এ সংঘর্ষ হয়। এ সময় শতাধিক ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ২৫টি ফাঁকা গুলি ছোড়ে।
রোববার রাতে গোয়েন্দা পুলিশ দেলোয়ার হোসেন তালুকদারকে আটক করে। পরে মুচলেকা রেখে আজ সোমবার দুপুরে তাঁকে ছেড়ে দেয়।
নড়িয়া থানা ও স্থানীয় সূত্র জানায়, নড়িয়ার নশাসন ইউপির চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন তালুকদার জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। একটি পশুর হাটের ইজারা নিয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা লিটন হাওলাদারের সঙ্গে দেলোয়ার হোসেন তালুকদারের সমর্থক মাসুম ছৈয়াল ও ফরহাদ মাঝির দ্বন্দ্ব হয়।
রোববার সন্ধ্যায় ফরহাদ মাঝি ও মাসুম ছৈয়াল লোকজন নিয়ে লিটন হাওলাদারের ওপর হামলা চালায়। পরে লিটন হাওলাদারের বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর করে তারা। রাত ৮টার দিকে লিটন হাওলাদার তাঁর লোকজন নিয়ে ডগ্রি বাজারে গেলে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। এ সময় শতাধিক ককটেল বোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। সংঘর্ষের সময় বঙ্গবন্ধু স্মৃতি পাঠাগারে ভাঙচুর করা হয়েছে। প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষে ১৫ জন আহত হয়। তাদের মধ্যে বাচ্চু মোল্লা নামে গোয়েন্দা পুলিশের একজন সদস্য আহত হন।
আহতরা শরীয়তপুর সদর হাসপাতাল ও স্থানীয় বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসা নিয়েছে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ২৫টি ফাঁকা গুলি ছোড়ে। পুলিশ রাতেই দেলোয়ার তালুকদারকে আটক করে শরীয়তপুরের গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয়ে নিয়ে যায়। পরে মুচলেকা রেখে আজ সোমবার দুপুরে তাঁকে ছেড়ে দেয়।
নশাসন ইউপির চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন তালুকদারের স্ত্রী সানজিদা হোসেন বলেন, ‘লিটন হাওলাদারের লোকজন আমার বাড়িতে হামলা করেছে। আমাদের কর্মীদের মারধর করেছে। রাতে পুলিশ কোনো অভিযোগ ছাড়াই আমার স্বামীকে নিয়ে যায়।’
লিটন হাওলাদার বলেন, ‘একটি পশুর হাট ইজারার ঘটনা নিয়ে দেলোয়ার তালুকদারের সমর্থকরা আমার বসতঘর ও দোকান ভাঙচুর করে। পরে গ্রামের লোকজন একত্রিত হয়ে আমার ওপর হামলার প্রতিবাদ জানিয়েছে।’
নড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইকরাম আলী মিয়া বলেন, আধিপত্য বিস্তার নিয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ২৫টি ফাঁকা গুলি ছুড়তে হয়েছে। এ বিষয়ে এখনো কোনো মামলা হয়নি। নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য দেলোয়ার তালুকদারকে পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়েছিল। পরে মুচলেকা রেখে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।