নওগাঁয় যুবককে পিটিয়ে হত্যা
নওগাঁর মহাদেবপুরে গরু কেনাবেচার টাকাকে কেন্দ্র করে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। আজ বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার খাজুর ইউনিয়নের রোনাইল আবাসন প্রকল্পে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত যুবক সুমন রহমান (৩০) রোনাইল আবাসন প্রকল্পের বাসিন্দা।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, প্রায় এক মাস আগে সুমন প্রতিবেশী ভোদর আলীর কাছ থেকে ২১ হাজার টাকায় একটি গরু কেনেন। কিন্তু সেই টাকা না দিয়েই সুমন উধাও হয়ে যান। হঠাৎ গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় সুমন রহমান তাঁর আবাসন প্রকল্পের বাড়িতে আসেন। এ খবর পেয়ে গরুর মালিক ভোদর আলী ও তার লোকজন সুমনের বাড়িতে আসেন। তাঁরা সেখানে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য ইউনুস আলীকে খবর দিয়ে আনেন।
নিহত সুমনের স্ত্রী মরিয়ম বেগম জানান, গতকাল রাত ১০টার দিকে ইউপি সদস্য ইউনুস আলী ও তাঁর সহযোগী গুলজার হোসেন, আরিফুল ইসলাম ও নিজামসহ ১৫-২০ জন লোক এসে তাঁর স্বামী সুমনকে বাড়ি থেকে বের করে নিয়ে যান এবং সালিস বসান। ওই সালিসে গরুর মালিক ভোদরসহ গ্রামের বাসিন্দারা উপস্থিত হন।
একপর্যায়ে সালিসের লোকজন সুমন রহমানকে গরু বিক্রির টাকা দিতে বলে। এ সময় তিনি বলেন, টাকা প্রতিবেশী একজনকে দিয়েছেন। কিন্তু কোন ব্যক্তিকে টাকা দিয়েছেন তার নাম জানাতে অস্বীকৃতি জানান।
এ সময় লোকজন সুমনকে সালিসেই টাকা দেওয়ার জন্য চাপ দেয়। টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করায় ইউপি সদস্য ইউনুস আলী ও তাঁর লোকজন লাঠি দিয়ে সুমনকে বেধড়ক পেটান। এ ঘটনায় গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন সুমন।
পরে ভোর ৪টার দিকে সুমনকে প্রথমে স্থানীয় গ্রাম্য চিকিৎসক বেলালের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। অবস্থার অবনতি দেখে চিকিৎসক বেলাল সুমনকে মহাদেবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠান। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার পরই সুমন মারা যান বলে হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।
মহাদেবপুর হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক মনিমুল ইসলাম এনটিভি অনলাইনকে জানান, সুমনের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন ছিল।
মহাদেবপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) নাজমুল হক জানান, লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নওগাঁ মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।