ছেলের বউ পছন্দ না, তাই নাতনিকে ছ্যাঁকা
ছেলের বউ পছন্দ না হওয়ায় সাড়ে তিন মাস বয়সী নাতনিকে তার দাদি গরম খুন্তি দিয়ে ছ্যাঁকা দিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। শিশুটি এখন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর ডান পায়ের ঊরুতে বেশ বড় ধরনের ক্ষত তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। তা সেরে উঠতেও সময় লাগবে। তবে এ ঘটনায় থানায় কোনো অভিযোগ করা হয়নি।
ঘটনাটি গত বুধবার পিরোজপুর সদর উপজেলার ভৈরমপুর গ্রামে ঘটে। নির্যাতিত শিশুটি গ্রামের শাহ আলম খানের ছেলে বাহরাইন প্রবাসী শফিক খানের মেয়ে ছোঁয়া। এ ঘটনায় বিচার দাবি করেছেন শিশুর মা হাসি বেগম। তবে এ ব্যাপারে শিশুটির দাদি মুরফিয়া বেগমের কোনো বক্তব্য সংগ্রহ করা যায়নি।
শিশুটির পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের প্রথম দিকে শফিকের সঙ্গে হাসির বিয়ে হয়। বিয়ের আগে শফিক পাঁচ বছর বাহরাইন ছিলেন। বিয়ের দুই মাস পর তিনি আবার বাহরাইন চলে যান। এর পর থেকেই বিভিন্ন সময় শফিকের মা মুরফিয়া বেগম ছেলের বউ হাসির ওপর নির্যাতন চালাতেন। এই অবস্থার মধ্যেই হাসি মেয়েশিশুর জন্ম দেন এবং অধিকাংশ সময় বাবার বাড়িতেই থাকতেন।
হাসির বাবা-মা অভিযোগ করেন, সম্প্রতি শাশুড়ি মুরফিয়া অসুস্থতার কথা বলে ছেলের বউকে নিজ বাড়িতে নিয়ে যান। গত বুধবার গরম খুন্তি দিয়ে ছোঁয়ার ডান পায়ের ঊরুতে ছ্যাঁকা দেন তার দাদি মুরফিয়া। এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে হাসি তাঁর শাশুড়িকে গালমন্দ করেন। এতে মুরফিয়া আরো ক্ষেপে গিয়ে দা দিয়ে হাসিকে আঘাত করেন। তাতে হাসির মাথার কয়েক গোছা চুল কেটে যায়।
একপর্যায়ে মুরফিয়া খুন্তি গরম করার জন্য আবারও রান্নাঘরে গেলে হাসি সেখান থেকে পালিয়ে বাবার বাড়ি চলে আসেন বলে জানান হাসির বাবা-মা। তাঁরা এ ঘটনার বিচার দাবি করেন।
গত বুধ ও বৃহস্পতিবার ছোঁয়াকে পিরোজপুর সদর হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে বাড়িতে নিয়ে যায় নানাবাড়ির লোকজন। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে গতকাল শুক্রবার রাতে ছোঁয়াকে আবারও পিরোজপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সে এখন চিকিৎসাধীন আছে।
আহত ছোঁয়ার মা হাসি জানান, বিয়ের পর থেকে শাশুড়ি তাঁর ওপর বিভিন্ন সময়ে নির্যাতন চালিয়ে আসছেন। মেয়েকে খুন্তির ছ্যাঁকা দেওয়ার পর তাঁর ভাসুর রফিক খান হাসপাতালে এসেছিলেন ঘটনার সত্যতা যাচাই করতে। এ ছাড়া শ্বশুরবাড়ি থেকে কেউ ছোঁয়াকে দেখতে আসেনি। তিনি এ ঘটনার বিচার দাবি করেন।
সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা (আরএমও) ননী গোপাল রায় জানান, শিশুটির ক্ষত বেশ বড় এবং এটি সেরে উঠতে সময় লাগবে। এ ধরনের ঘটনা খুবই মর্মান্তিক ও অনাকাঙ্ক্ষিত।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এনায়েত হোসেন জানান, এ ঘটনায় এখনো কোনো মামলা হয়নি। মামলা হলে পুলিশ যথাযথ ব্যবস্থা নেবে।
এ ব্যাপারে হাসির শাশুড়ি মুরফিয়ার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।