নিষেধাজ্ঞা শেষ, ধরা পড়ছে প্রচুর ইলিশ
মা ইলিশ রক্ষায় মাছ ধরার ওপর ১৫ দিনব্যাপী নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়েছে গতকাল শুক্রবার রাত ১২টায়। এরপরই ভোলার মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীতে মাছ ধরতে জাল ও নৌকা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন জেলেরা। তাঁরা জানালেন, প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ছে। মাছের আকারও বেশ বড়।
জেলে আমিনুল ইসলাম মাঝি এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘১৫ দিন মাছ ধরতে পারিনি। এখন আর বাধা নেই। স্ত্রী আর সন্তানাদি নিয়ে খুব কষ্টে ছিলাম। এখন আল্লাহ যদি কিছু দেয়।’
অপর জেলে সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘এখন নদীতে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ছে। এভাবে ধরা পড়লে আর কষ্ট থাকবে না।’
তবে নিষেধাজ্ঞার সময় মাছ ধরা বন্ধ ছিল না বলে অভিযোগ করেন সাদ্দাম। তিনি বলেন, ‘প্রভাবশালীরা সবাইকে ম্যানেজ করে মাছ ধরেছে। এখন দেখা যাক মাছের দাম কেমন হয়।’
এদিকে জেলেদের মাছ শিকারকে কেন্দ্র করে ফের সচল হতে শুরু করেছে মৎস্যঘাটগুলো। পাইকার, আড়তদার, জেলে ও ক্রেতা-বিক্রেতাদের হাঁকডাকে সরগরম এসব ঘাট।
ভোলা সদর উপজেলার সাহেদ আলী ব্যাপারী বলেন, ‘মাছের সাইজ এ বছর বড়। এক কেজি ওজনের ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে বেশি। দেড় কেজি ও দুই কেজি ওজনের ইলিশ মাছ পাচ্ছেন জেলেরা। এক কেজি ওজনের মাছের হালি এখন সাড়ে তিন হাজার টাকা। তার চেয়ে বড়গুলোর দাম চার হাজার থেকে সাড়ে চার হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ১৫ দিনের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারব বলে আশা করছি।’
ঢালচরের ফরাজী আলম মুঠোফোনে জানান, ভালো ইলিশ ধরা পড়ছে জেলেদের জালে। তবে মা ইলিশ নিধনের সময় পুরোপুরি মাছ ধরা বন্ধ করতে না পারায় তখন ব্যাপক মা ইলিশ ধরা পড়েছে।
এসব বিষয়ে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা প্রীতিষ কুমার মল্লিক এনটিভি অনলাইনকে জানান, নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মাছ ধরায় গত ১৫ দিনে তিন শতাধিক জেলেকে কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে। আটক ও জব্দ করা হয়েছে বিপুল পরিমাণ জাল, ট্রলার ও ইলিশ। নিষেধাজ্ঞা শেষ হতেই জেলেরা নদীতে নেমে পড়েছেন। এখন ভালো মাছ ধরা পড়ছে জেলেদের জালে।
জেলা প্রশাসক মো. সেলিম রেজা বলেন, ‘এ বছর সফলভাবে মা ইলিশ নিধন রোধ করতে সম্ভব হয়েছি। সার্বক্ষণিক আমার ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারাসহ পুলিশ, কোস্টগার্ডসহ মৎস্য বিভাগের লোকজন ব্যস্ত ছিল। কোনো ধরনের ছাড় দেওয়া হয়নি।’
প্রশাসনকে ম্যানেজ করে মাছ ধরার অভিযোগ সম্পর্কে জেলা প্রশাসক বলেন, কাজ করলে অভিযোগ থাকবেই।
ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে গত ২৪ সেপ্টেম্বর রাত ১২টা ১ মিনিট থেকে থেকে ৯ অক্টোবর রাত ১২টা পর্যন্ত মা ইলিশ ধরা, মজুদ, বিক্রি ও পরিবহন নিষিদ্ধ করে মৎস্য অধিদপ্তর।