ধর্ষণের অভিযোগ, সেই দুই পুলিশ সদস্য গ্রেপ্তার
মানিকগঞ্জে এক তরুণীকে ইয়াবা খাইয়ে ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত সাটুরিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সেকেন্দার হোসেন ও সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মাজহারুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গতকাল সোমবার দিবাগত রাতে উভয়কে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁদের পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার তাঁদের আদালতে পাঠানো হবে।
এদিকে, তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছে তদন্ত কমিটি। এ ঘটনায় ওই দুই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সোমবার সন্ধ্যায় সাটুরিয়া থানায় মামলা করেন ওই তরুণী। এরপর রাত ৮টায় ওই তরুণীর মেডিকেল টেস্ট করা হয়।
জানা যায়, এসআই সেকেন্দার হোসেন ঢাকার আশুলিয়া থানায় কর্মরত থাকার সময় এক নারীর কাছ থেকে এক লাখ টাকা ঋণ নিয়ে জমি কেনেন। কথা ছিল, জমি বিক্রির লাভ তাঁকে দেওয়া হবে। সে হিসেবে তিনি সেকেন্দার হোসেনের কাছে প্রায় তিন লাখ টাকা পাবেন। কিন্তু টাকা না দিয়ে ঘোরাতে থাকেন। সাটুরিয়া থানায় বদলি হয়ে আসার পরও সেকেন্দারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন ওই নারী।
গত বৃহস্পতিবার বিকেলে প্রতিবেশী ভাগ্নিকে (ভুক্তভোগী তরুণী) নিয়ে সাটুরিয়া থানায় যান ওই নারী। এর পর সেকেন্দারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি টাকা দেবেন বলে তাঁদের সাটুরিয়া ডাকবাংলোতে নিয়ে যান। সন্ধ্যার পর সাটুরিয়া থানার এএসআই মাজহারুল ইসলামকে ডাকবাংলোতে নিয়ে যান সেকেন্দার হোসেন।
ডাকবাংলোর একটি কক্ষে টাকা পাওনাদার নারীকে আটকে রাখেন তাঁরা। আর অন্য কক্ষে ওই নারীর সঙ্গে আসা তরুণীকে জোর করে ইয়াবা সেবন করান পুলিশের এই দুই কর্মকর্তা।
ওই দুই পুলিশ সদস্যও ইয়াবা সেবন করেন। পরে তাঁরা তরুণীকে আটকে রেখে ধর্ষণ করেন। পরদিন শুক্রবার তরুণীকে ছেড়ে দেন।
এরপর ওই তরুণী পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন।
গত শনিবার রাতে বিষয়টি জানার পর মানিকগঞ্জ পুলিশ সুপার রিফাত রহমান শামীমের নির্দেশে অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের থানা থেকে প্রত্যাহার করে জেলা পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়।
এরপর রোববার পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী তরুণী। এ ঘটনা তদন্তে দুই সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তাঁরা হলেন মানিকগঞ্জ সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হাফিজুর রহমান এবং জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার হামিদুর রহমান সিদ্দিকী।
এদিকে সোমবার রাতেই ওই তরুণীর মেডিকেল পরীক্ষা সম্পূর্ণ হয়েছে বলে জানান মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেলা হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক মো. লুৎফর রহমান। তিন দিনের মধ্যেই প্রতিবেদন দেবেন বলে জানান তিনি।