ইলিশ ধরা ৩০ দিন নিষিদ্ধ হচ্ছে
ইলিশরক্ষায় প্রজনন মৌসুমে ১৫ দিনের পরিবর্তে ৩০ দিন ইলিশ ধরা নিষিদ্ধের সুপারিশ করা হয়েছে। আজ রোববার মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এর সদস্যরা এ সুপারিশ করেন।ৱ
সভাপতি মীর শওকাত আলী বাদশার সভাপতিত্বে কমিটির ১১তম বৈঠকে নিখোঁজ জেলেদের পরিবারপ্রতি ৫০ হাজার টাকা প্রদানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এখন পর্যন্ত প্রাকৃতিক দুর্যোগে ১০৭ জন জেলে নিহত এবং ১৩৫ জন নিখোঁজ রয়েছে বলে কমিটিতে জানানো হয়েছে।
বৈঠক শেষে শওকাত আলী বলেন, ‘বর্তমানে ১৫ দিন ইলিশ আহরণ নিষিদ্ধ। কমিটির সদস্যরা মত দিয়েছেন এটিকে ৩০ দিন করার। তাই কমিটি এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের মতামত নিয়ে আগামী প্রতিবেদন উপস্থাপনের জন্য মন্ত্রণালয়কে বলা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে গবেষকদের মতামত নিয়ে ১৫ দিন ও এক মাস করার ক্ষেত্রে কী কী সুবিধা তার একটি প্রতিবেদন আগামী বৈঠকে দিতে বলা হয়েছে।’
নিখোঁজ জেলেদের পরিবারকে সহায়তার ব্যাপারে শওকাত আলী বলেন, ‘কমিটি উপকূলে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে মৃত বা নিখোঁজ জেলে পরিবারের পুনর্বাসনের জন্য প্রয়োজনীয় আর্থিক সহায়তা দেওয়ার জন্য মন্ত্রণালয়কে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছে। আর এ জন্য পরিবারপ্রতি ৫০ হাজার টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিটি, যা মন্ত্রণালয়কে বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে।’ এর পাশাপাশি তিনি এও বলেন, ‘নিখোঁজদের যদি মৃত হিসেবে শনাক্ত করা যায় তাহলে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে ৫০ হাজার টাকা পরিবারপ্রতি দিতে সুপারিশ করা হয়েছে।’
শওকাত আলী বলেন, ‘আমার সংসদীয় এলাকা বাগেরহাটে এখনো ৩৪ জন জেলে নিখোঁজ রয়েছে। আটটি ট্রলার ডুবে গিয়েছিল। এর মধ্যে একটি উদ্ধার হয়েছে। তাই তাদের পুনর্বাসনের জন্য উপজেলা ও জেলা মৎস্য কর্মকর্তার তথ্যের ভিত্তিতে মন্ত্রণালয়কে এই উদ্যোগ নিতে সুপারিশ করা হয়েছে।’
সংসদ সচিবালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বৈঠকে চলতি মা-ইলিশ সংরক্ষণ কার্যক্রমের অগ্রগতি, জেলেদের বিকল্প কর্মসংস্থান, গবেষণার ফলাফল পর্যালোচনা, প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে মৃত বা নিখোঁজ জেলে পরিবারের পুনর্বাসন সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়।
বৈঠকে বলা হয়, সর্বোচ্চ প্রজনন মৌসুমে ১৫ দিন ইলিশ আহরণ নিষিদ্ধ করায় ইলিশের প্রজনন অধিকতর ফলপ্রসূ হয়েছে। মৎস্য অধিদপ্তরের ঘোষিত এই কার্যক্রমের বাস্তবায়ন অব্যাহত থাকলে ইলিশের প্রজননে সাফল্য, জাটকার প্রাপ্যতা এবং ইলিশের উৎপাদন ২৫-৩৫ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে।
বৈঠকে কমিটির সদস্য মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী মোহাম্মদ ছায়েদুল হকসহ মো. কামাল আহমেদ মজুমদার, মো. গোলাম মোস্তফা বিশ্বাস, ইফতিকার উদ্দিন তালুকাদার পিন্টু, খন্দকার আজিজুল হক আরজু, মুহম্মদ আলতাফ আলী এবং সামছুন নাহার বেগম বৈঠকে অংশ নেন।
এ ছাড়া মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব, মৎস্য অধিদপ্তরের ডিজি, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের ডিজি, বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশনের চেয়ারম্যানসহ মন্ত্রণালয় এবং জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।