ভৈরবে অটোরিকশাচালক সিদ্দিক হত্যা মামলার ২৯ আসামি কারাগারে
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক সিদ্দিক মিয়া হত্যা মামলার ২৯ আসামির জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
ওই হত্যায় ঘটনায় নিহতের ভাই রইছ উদ্দিন বাদী হয়ে ৫২ জনকে আসামি করে ভৈরব থানায় একটি মামলা করেছিলেন। মামলার আসামিরা এতদিন জামিনে ছিলেন। এই মামলার অপর পাঁচ আসামি আনোয়ারুল হক, রাজন মিয়া, মুছা মিয়া, শুকুর মিয়া ও জসিম উদ্দিন হাইকোর্ট থেকে জামিনে আছেন।
বাদীপক্ষ সূত্রে জানা যায়, সোমবার সকালে মামলার ২৯ জন আসামি কিশোরগঞ্জের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে হাজিরা দিতে গেলে আদালত তাদের জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠান। মামলার প্রধান আসামি ভৈরব উপজেলার সাদেকপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান সরকার শেফাত উল্লাহ ও তাঁর ভাই আল-আমিন এবং ছেলে রাহিমকে অভিযোগপত্র থেকে বাদ দেওয়ায় বাদী সোমবার আদালতে নারাজি দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিচারক আসামিদের জামিন বাতিল করে শুনানির দিন ধার্য করার নির্দেশ দেন। নারাজির বিষয়টি আগামী ধার্য তারিখে শুনানি হবে বলে আদালতের আইনজীবী জহিরুল হক জানিয়েছেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ১৫ জুলাই ভৈরব উপজেলার সাদেকপুর ইউনিয়নের মেন্দিপুর এলাকায় সিএনজি অটোরিকশার ভাড়া নিয়ে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে প্রতিপক্ষরা চালক সিদ্দিক মিয়াকে কুপিয়ে হত্যা করে। এ সময় বাদী রইছউদ্দিন, স্বপ্না বেগম, নিজাম উদ্দিন ও আবদুর রাজ্জাক নামের চারজন নিকট আত্মীয় গুরুতর আহত হন।
এই ঘটনায় নিহতের ভাই রইছ উদ্দিন বাদী হয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান শেফাত উল্লাহসহ ৫২ জনকে আসামি করে ভৈরব থানায় একটি মামলা করেন। পরে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ মামলাটি সুষ্ঠু ও অধিকতর তদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ সিআইডিতে পাঠায়। ৯ মাস তদন্ত শেষে সিআইডি গত মাসে কিশোরগঞ্জ আদালতে অভিযোগপত্র দেয়। এতে চেয়ারম্যানসহ তিনজনের নাম বাদ দেওয়া হয়। সোমবার অভিযোগপত্রটি আদালতে গ্রহণ করার কথা ছিল। কিন্তু বাদী আদালতে নারাজি দেওয়ায় সেটি গ্রহণ না করে হাজিরা দিতে যাওয়ায় জামিনে থাকা ২৯ জনের জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠানো হয়।
মামলার বাদী রইছ উদ্দিন বলেন, খুনের পরিকল্পনাকারী ও মামলার প্রধান আসামি চেয়ারম্যান শেফাত উল্লাহকে অভিযোগপত্র থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। আমি মনে করি সিআইডির তদন্ত কর্মকর্তা আসামির সঙ্গে প্রভাবিত হয়ে এ কাজটি করেছেন। তাই নারাজি দিয়েছি এবং আমি আদালতে মামলাটির পুনরায় তদন্তের দাবি করেছি।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কিশোরগঞ্জ সিআইডির উপপরিদর্শক তারা মিয়া জানান, ঘটনা তদন্ত করে খুনের ঘটনায় চেয়ারম্যানসহ তিনজনের সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি। তাই তিনজনকে অভিযোগপত্র থেকে বাদ দেওয়া হয়। বাদী নারাজি দিলে আদালতের পরবর্তী আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে কর্তৃপক্ষ পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে তিনি জানান।