১৯ মে থেকে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটে সব টিভি চ্যানেল
বাংলাদেশের প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহ বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ মহাকাশে উৎক্ষেপণ করার এক বছর পূর্তি আজ ১২ মে। গত বছর এই দিনে বিশ্বের ৫৭তম দেশ হিসেবে মহাকাশে কৃত্রিম স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করে বাংলাদেশ।
এদিকে আগামী ১৯ মে থেকে দেশের সব টেলিভিশন চ্যানেল বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট থেকে সেবা নেবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ কমিউনিকেশন স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেডের (বিসিএসসিএল) চেয়ারম্যান শাহজাহান মাহমুদ। পাঁচ থেকে সাত বছরের মধ্যে স্যাটেলাইটের খরচ উঠে আসবে বলেও জানান তিনি।
শাহজাহান মাহমুদ জানান, ভূপৃষ্ঠ থেকে ২২ হাজার মাইল ওপরে মহাকাশের ১১৯ দশমিক ১ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমায় অবস্থান করছে বাংলাদেশের প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহ বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১। প্রায় দুই হাজার ৭৬৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত স্যাটেলাইটটি কক্ষপথে যাওয়ার পর ফ্রিকোয়েন্সির আওতায় এসেছে ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন, বাংলাদেশ, ভারত ও তাজিকিস্তানসহ বেশ কিছু দেশ। ৪০টি ট্রান্সপন্ডারের মধ্যে ২৬টি কেইউ ব্যান্ড এবং ১৪টি সি ব্যান্ড থেকে ব্যান্ডইউথ সরবরাহ করে নানা ধরনের সেবা দিতে শুরু করেছে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১।
বিসিএসসিএল চেয়ারম্যান শাহজাহান মাহমুদ বলেন, টেলিভিশনগুলো আমাদের স্যাটেলাইট নেওয়ার মাধ্যমে প্রচার করবে। এছাড়া আমরা ডিটিএইচ একটা সার্ভিস চালু করব, যেটাকে বলে ডিরেক্ট টু হোম। মূল ভূখণ্ড থেকে অনেক দূরে যেসব দ্বীপাঞ্চলগুলোতে ফাইবার অপটিক্যাল যায় না সেখানে আমরা স্যাটেলাইটের মাধ্যমে ব্যান্ডউইথ দেব। সেটা দিয়ে ওইখানে টেলিমেডিসিন, টেলিএডুকেশন এবং থ্রিজি ফোরজি সেবা দেব। এমনকি এটিএম মেশিনসহ এ ধরনের সব সেবা থাকবে।
টেলিভিশন ও বেতার সম্প্রচার, ইন্টারনেট সেবাদান, ভি-স্যাটসহ নানা ধরনের সেবা দেবে ১৫ বছর মিশনের বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১। এরই মধ্যে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট থেকে সেবা নিতে শুরু করেছে দেশের কয়েকটি টেলিভিশন চ্যানেল। আর আগামী ১৯ মে থেকে দেশের সব টেলিভিশন চ্যানেল আনুষ্ঠানিকভাবে যুক্ত হচ্ছে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট ১-এর সঙ্গে। এর আগে এসব সেবার জন্য দেশের টেলিভিশন চ্যানেলকে সিঙ্গাপুর, হংকসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের স্যাটেলাইট ব্যবহার করত।
বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল মালিকদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব টেলিভিশন চ্যানেল ওনার্সের (অ্যাটকো) সভাপতি অঞ্জন চৌধুরী বলেন, টেলিভিশন চ্যানেল চিন্তাভাবনা করে সবকিছু পরীক্ষা করেই আমাদের এটাতে যাওয়া উচিত। কিন্তু আমরা চ্যানেল মালিকরা প্রস্তুত আছি। শুধু বাংলাদেশের দর্শক নয়, সারা পৃথিবীতে আমাদের দর্শক আছে। সেখানে একটা বিরাট অংশ হচ্ছে আমাদের প্রবাসী বাংলাদেশিরা, তারা খুব আগ্রহভরে এই চ্যানেলগুলো দেখেন। অতএব, আমরা যাতে প্রত্যেকটা জায়গাতেই পৌঁছাতে পারি, সেই জায়গাটা নিশ্চিত করার দায়িত্ব বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট কর্তৃপক্ষের।
এদিকে শুধু টেলিভিশন কিংবা বেতার সম্প্রচার নয়, ব্যাংকিং সেবা দিতেও প্রস্তুত বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১। এটিএম বুথের সেবা নিশ্চিত করতে এরই মধ্যে কয়েকটি ব্যাংক যুক্ত হয়েছে দেশের প্রথম এই স্যাটেলাইটের সঙ্গে। এ ছাড়া দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও ব্যান্ডইউথ রপ্তানির জন্য বাজার তৈরি করছে বাংলাদেশ।