মাদারীপুরে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ, পুলিশ কনস্টেবল গ্রেপ্তার
মাদারীপুর পৌরসভায় স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ ও ঘরের ভেন্টিলেটর দিয়ে ফেলে দেওয়ার অভিযোগে পুলিশ কনস্টেবল মোক্তার হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
মঙ্গলবার সকালে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার উত্তম প্রসাদ পাঠক। তিনি জানান, সোমবার রাতে স্কুলছাত্রীর মামা বাদী হয়ে মাদারীপুর সদর থানায় মোক্তার হোসেনকে আসামি করে ধর্ষণ ও হত্যা চেষ্টার অভিযোগে একটি মামলা করেন। সেই মামলার ভিত্তিতে মোক্তারকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর আগে তাকে প্রত্যাহার করে নজরদারি রাখা হয়েছিল। এ ছাড়া যৌন নির্যাতনের অভিযোগ তদন্ত করার জন্য অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বদরুল আলম মোল্লাকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটিও গঠিত হয়েছে।
স্থানীয় লোকজন ও মামলার বিবরণে জানা গেছে, মাদারীপুর পুলিশ লাইনের কনস্টেবল মোক্তার হোসেন দীর্ঘদিন থেকে শহরের টিবি ক্লিনিক সড়কে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকেন। কয়েক দিন আগে মোক্তারের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী গ্রামের বাড়িতে চলে যান। এই সুযোগ গত রোববার রাতে প্রতিবেশী এক স্কুলছাত্রীকে ঘরে ডেকে নেন মোক্তার হোসেন। এ সময় দরজা বন্ধ করে ওই স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ করেন। বিষয়টি টের পেয়ে স্থানীয় লোকজন বাইরে থেকে দরজা বন্ধ করে দেন। পরে মোক্তার হোসেন ওই স্কুলছাত্রীকে ঘরের ভেন্টিলেটর দিয়ে ফেলে দেন। এতে ওই মেয়েটি গুরুতর আহত হয়। পরে স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। ওই ছাত্রী এবারের এসএসসি পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয়েছে।
নির্যাতনের শিকার ওই স্কুলছাত্রী জানায়, রোববার রাতে সে মোক্তার হোসেনের মেয়েকে ডাকতে গিয়েছিল। ওই সময় মোক্তার তাকে ঘরে ডেকে নিয়ে দরজা বন্ধ করে খারাপ কাজ করেন। পরে স্থানীয়রা টের পেয়ে বাইরে থেকে দরজা বন্ধ করে দিলে মোক্তার তাকে ভেন্টিলেটর দিয়ে ফেলে দেন। এতে তার পায়ের হাড় ভেঙে গেছে। এর আগে মোক্তার তাকে লাঠি দিয়ে পিটিয়েছেন।
এ ব্যাপারে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, দীর্ঘক্ষণ ঘরের মধ্যে ওই মেয়েকে নিয়ে থাকায় তাদের সন্দেহ হয়। পরে তারা বাইরে থেকে ঘরের দরজা বন্ধ করে দিলে মোক্তার হোসেন মেয়েটিকে ভেন্টিলেটর দিয়ে ফেলে দেন। এতে মেয়েটি গুরুতর আহত হয়ে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
এ ব্যাপারে হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. লেলিন জানান, মেয়েটির হাড় ভেঙে গেছে। প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। সেরে উঠতে কমপক্ষে তিন মাস সময় লাগবে।
গ্রেপ্তারের আগে অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য মোক্তার হোসেন সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। আমাকে শুধু শুধু স্থানীয়রা ঘরের বাইরে থেকে দরজা বন্ধ করে দিয়েছিল। ওই মেয়ের সঙ্গে আমার কিছু হয়নি।’
আপনার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করলে আপনি পুলিশ সুপার বা ওসির সাহায্য নেননি কেন? এমন প্রশ্ন করা হলে মোক্তার হোসেন কোনো উত্তর দিতে পারেননি।