ধর্ষণ মামলার আসামি ধরতে এমন ফাঁদ!
ধর্ষণ মামলার পলাতক আসামিকে গ্রেপ্তার করতে অভিনব ফাঁদ পেতে সফল হয়েছে রাজশাহীর বাগমারা থানা পুলিশ। থানার এক নারী পুলিশ সদস্য নিজের পরিচয় গোপন করে মোবাইল ফোনে আসামি আবুল কালাম আজাদের সাথে যোগাযোগ করে প্রেমের প্রস্তাব দেয়। এতে সে সাড়া দিলে পুলিশের ওই নারী সদস্য দেড় মাস ধরে তার সাথে প্রেমের অভিনয় করে যায়। এতে আকৃষ্ট হয়ে আবুল কালাম আজাদ ওই নারী পুলিশ সদস্যের সঙ্গে দেখা করার জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে।
ঈদ উপলক্ষে নারী পুলিশ সদস্য আজ শুক্রবার দুপুরে বাগমারা-মোহনপুর থানার সীমান্তবর্তী হাসনাবাদ এলাকায় আবুল কালাম আজাদের সাথে দেখা করার সময় ঠিক করেন। তার কথা মতো দেখা করতে এসে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়ে আবুল কালাম আজাদের ঠাঁই হয়েছে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে।
বাগমারা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সৌরভ কুমার চন্দ্র জানান, উপজেলার শুভডাঙ্গা ইউনিয়নের সৈয়দপুর গ্রামের বাসিন্দা আবুল কালাম আজাদ (২৭) গত ১৫ এপ্রিল এলাকার এক নারীর ঘরে ঢুকে তাকে ধর্ষণ করেন বলে বাগমারা থানায় মামলা হয়েছে। মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, ঘটনার সময় ওই নারীর চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে আবুল কালাম আজাদ পালিয়ে যায়। পরদিন ওই নারী বাদী হয়ে আবুল কালাম আজাদকে আসামি করে থানায় মামলা করেন। ঘটনার পর থেকে আসামি আজাদ পলাতক ছিলেন। নানাভাবে তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয় পুলিশ।
এসআই সৌরভ আরও জানান, আসামিকে গ্রেপ্তারে তিনি থানার একজন নারী পুলিশ সদস্যকে দিয়ে আবুল কালাম আজাদকে প্রেমের ফাঁদে ফেলেন। দেড় মাস ধরে নারী পুলিশ সদস্য আসামির সাথে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে প্রেমের অভিনয় করেন। ঈদ উপলক্ষে শুক্রবার দুপুরে তাঁরা উভয়ে বাগমারা-মোহনপুর থানার সীমান্তবর্তী হাসনাবাদ এলাকায় দেখা করার সময় ঠিক করেন। ওই সময় তারা কী ধরনের পোশাক পরবেন, সেটাও আলাপ হয় মোবাইল ফোনে। পোশাক দেখে পরস্পরকে চেনা যাবে বলেও ঠিক হয়। দুপুর একটার দিকে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সৌরভ কুমার চন্দ্র নারী কনস্টেবলকে নিয়ে নির্ধারিত স্থানে হাজির হন। সাদা পোশাকে থাকা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পাশেই ওঁৎ পেতে থাকেন। পোশাক দেখে আবুল কালাম আজাদ নারী কনস্টেবলের কাছে এসে গল্প শুরু করলে তাকে ধরে ফেলে পুলিশ। পরে আদালতের মাধ্যমে তাকে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়।
বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতাউর রহমান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ‘আসামি ধরতে পুলিশকে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করতে হয়। এতে অনেক সময় তাদের নানা ঝুঁকিও মোকাবিলা করতে হয়।’