রকির বিরুদ্ধে মামলা, পাঁচ দিনের রিমান্ড চেয়েছে পুলিশ
বিয়ের আসরে কনের সৎবাবা তুলা মিয়াকে (৪৫) খুনের অপরাধে সজীব আহমেদ রকির (২২) বিরুদ্ধে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে নিহত তুলা মিয়ার ছেলে সুজন মিয়া বাদী হয়ে মামলা করেছেন।
আজ শুক্রবার দুপুরে হাতিরঝিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুর রশিদ এনটিভি অনলাইনকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
আবদুর রশিদ এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘খুনের মামলায় রকিকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে পাঁচ দিনের রিমান্ড চেয়ে আজ দুপুর ১২টায় আমরা তাঁকে আদালতে পাঠিয়েছি।’
আবদুর রশিদ বলেন, “প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রকি খুনের ঘটনা স্বীকার করে আমাকে বলেছে, ‘স্বপ্নার সঙ্গে আমার প্রেমের সম্পর্ক ছিল অনেকদিন। তার বিয়ে আমি মেনে নিতে পারিনি। তাই আমি এই ঘটনা ঘটিয়েছি।’”
গতকাল বৃহস্পতিবার বিয়ের আসরে কনের সৎবাবা তুলা মিয়াকে ছুরিকাঘাতে খুন করেছিলেন সজীব আহমেদ রকি। তবে বুধবার বিকেল থেকেই রকি রাজধানীর মগবাজারের দিলু রোড এলাকায় ঘোরাঘুরি করছিলেন। শুধু তাই নয়, বুধবার রাতে তুলা মিয়ার বাড়িতে ঢুকে মেয়ে স্বপ্না ও তাঁকে হত্যার হুমকিও দেন রকি।
এখানেই থেমে থাকেননি রকি। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৮টার পর থেকে বিজিএমইএ ভবনের দক্ষিণ পাশের রাস্তা দিয়ে হাঁটছিলেন তিনি। হাঁটার সময় জোরে জোরে বলছিলেন, ‘আমার স্বপ্নাকে অন্য জায়গায় বিয়ে দিলে সংসার ভেঙে দেব।’
ঘাতক রকিকে এলাকায় ঘুরতে এবং তুলা মিয়া খুনের হুমকি দেওয়ার বিষয়টি স্থানীয় অনেকেই শুনেছেন। এতে আতঙ্কিত হয়ে তুলা মিয়া এই ঘটনা হাতিরঝিল থানায় জানান দুপুর ১২টার দিকে। সাড়ে ১২টার দিকে থানা থেকে পুলিশও এসেছিল ঘটনাস্থলে। কিন্তু রকিকে পায়নি তারা।
প্রিয়াঙ্কা শুটিং হাউজে স্বপ্নার বিয়ে সম্পন্ন হয়। মাত্র কয়েকজন নিয়ে বিয়ের আয়োজন ছিল। ছেলের পক্ষ থেকে তিনজন আর মেয়ের পক্ষ থেকে কয়েকজন থাকবে বলে কথা ছিল। রকি বিয়ের আসরে ঝামেলা করবে ভেবে শুটিং হাউজের গেটে তালাও লাগিয়ে রেখেছিলেন কনের বাবা তুলা মিয়া। এরপর দুপুর দেড়টার একটু আগে গেটের ওপর দিয়ে লাফ দেন রকি। তখন তার হাতে একটা ছুরি ছিল। গেটের ভেতরে ঢুকেই নিচতলার একজনের কাছে রকি জানতে চান, ‘আমার স্বপ্না কই?’ দুইতলায় উঠার সময় তুলা মিয়া রকিকে আটকানোর চেষ্টা করেন। তখন তুলা মিয়াকে ছুরি দিয়ে বুকে একটি ও তলপেটে দুটি খোঁচা দেন রকি। এরপর কনের মা ফিরোজা খাতুন এগিয়ে গেলে তাঁর তলপেটেও একটা খোঁচা দেন। সে সময় মো. ফরিদ নামের একজন গিয়ে রকির কাছ থেকে ছুরি কেড়ে নেয়। পরে তাকে দঁড়ি দিয়ে বেঁধে ফেলা হয়। এরপর পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে রকিকে আটক করে নিয়ে যায়।