ভুল সংকেতে প্রাণ গেল লাইনম্যানের
রাজশাহীর বাগমারা উপজেলায় বিদ্যুৎ অফিসের ভুল সংকেতের কারণে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে প্রাণ গেল লাইনম্যান রিয়াজ উদ্দীনের (৫২)। তিনি দীর্ঘদিন বিদ্যুতের কাজ করলেও শেষ রক্ষা হলো না তাঁর। আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার বাগমারা গ্রামের হঠাৎপাড়ায় বিদ্যুতের পোলে কাজ করার সময় মৃত্যু হয় তাঁর।
নিহত রিয়াজ উদ্দিন বাগমারা হঠাৎপাড়া গ্রামের মৃত ফয়েজ উদ্দিনের ছেলে।
নিহত রিয়াজ উদ্দীনের সহকর্মীরা জানান, বৃহস্পতিবার নাটোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১-এর বাগমারা জোনাল অফিস থেকে তিনটি মিটার নিয়ে আসেন লাইনম্যান রিয়াজ উদ্দীন। শুক্রবার সকালে হঠাৎপাড়া গ্রামের তিন বাড়িতে মিটারগুলো লাগিয়ে দেন। ওই তিনটি মিটারে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার জন্য পোলে উঠার আগে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করার জন্য পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির বাগমারা জোনাল অফিসে ফোন করে জানান রিয়াজ উদ্দীনের সঙ্গে থাকা লোকজন।
অফিস থেকে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধের সবুজ সংকেত পাওয়ার পরেই সংযোগ দিতে পোলে ওঠেন রিয়াজ। সংযোগ দিতেই বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যান তিনি। সঙ্গে সঙ্গে আগুনে শরীর পুড়ে যায়।
রাজশাহীর বাগমারা উপজেলায় বিদ্যুৎস্পৃষ্টে মৃত্যুর পর এভাবেই তারে ঝুলে থাকে রিয়াজের পোড়া শরীর। ছবি : এনটিভি
পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির বাগমারা অফিস সূত্রে জানা গেছে, রিয়াজ উদ্দীন দীর্ঘদিন ধরে নাটোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির বাগমারা শাখায় হেলপার হিসেবে লাইনম্যানদের সঙ্গে কাজ করতেন। কয়েক বছর আগে একটি দুর্ঘটনায় মারাত্মক জখম হয়েছিলেন তিনি। সবার সহযোগিতায় চলাফেরা করার মতো সুস্থ হয়ে ওঠেন। সংসারে অভাব-অনটন আর সেই সঙ্গে দুই ছেলে ও এক মেয়ের লেখাপড়ার খরচ জোগাতে গিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বিদ্যুতের কাজে আবার যোগ দেন।
নাটোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১-এর বাগমারা জোনাল অফিসের উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) রেজাউল করিমের দাবি, রিয়াজ উদ্দীনের দেওয়া ভুল তথ্যের কারণে ওই লাইন বন্ধ না করে অন্য লাইন বন্ধ করেছে অফিসের লোকজন। অফিসে সঠিক তথ্য দেওয়া হলে সঠিক লাইনই বন্ধ করা হতো। রিয়াজের দেওয়া ভুল তথ্যেই কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। তবে কেন এমনটি হলো, বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন বলে জানান তিনি।
ডিজিএম বলেন, রিয়াজ উদ্দীনের সাংসারিক অবস্থা ভালো না হওয়ার কারণে তিনি লাইনম্যানদের সঙ্গে থেকে বিদ্যুতের কাজ করে সংসার চালাতেন।
বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতাউর রহমান বলেন, রিয়াজ উদ্দীনের মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনায় একটি অপমৃত্যুর মামলা করা হয়েছে।